আফগানিস্তানে আইএস-খোরাসান প্রধানকে হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হবার জন্য অপেক্ষা করছে জাতিসংঘ

সাইট ইন্টেলিজেন্স গ্রুপের ৫ নভেম্বর, ২০১৯-এ জারি করা এই ছবিতে, আফগানিস্তানে আইএস-খোরাসানের যোদ্ধারা, নতুন ইসলামিক স্টেট নেতা আবু ইব্রাহিম আল-হাশিমি আল-কুরাশির প্রতি আনুগত্যের শপথ নিচ্ছে। (ফাইল ছবি)

জাতিসংঘের একটি নতুন প্রতিবেদন, আফগানিস্তানে ইসলামিক স্টেট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সহযোগী গ্রুপ আইএস-কে প্রধানের কথিত মৃত্যুর বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তবে, তারা উল্লেখ করেছে, আল-কায়েদার সাথে ক্ষমতাসীন তালিবানের "ঘনিষ্ঠ এবং সহানুভূতিশীল" সম্পর্ক রয়েছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা পর্যবেক্ষণ দলের এই সপ্তাহে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি সদস্য-রাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি। প্রতিবেদনটি ইসলামিক স্টেট-খোরাসান প্রদেশের উপর আলোকপাত করে তৈরি করা হয়েছে। আইএস-কে কিংবা আইএসআইএল-কে নামে ওই গ্রুপটি, আফগানিস্তান এবং ওই এলাকার বৃহত্তর অঞ্চল জুড়ে "সবচেয়ে গুরুতর সন্ত্রাসী হুমকি" বলে বিবেচিত।

“সানাউল্লাহ গাফরি (ওরফে শাহাব আল-মুহাজির) কে আইএসআইএল-কে-এর সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্খী নেতা হিসেবে দেখা হয়। জাতিসংঘের এক সদস্য রাষ্ট্র জানিয়েছে, গত জুন মাসে আফগানিস্তানে গাফারি নিহত হয়েছেন”। তবে, মঙ্গলবার প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বিশদ বিবরণ ছাড়াই জানানো হয়েছে, এই ব্যাপারে এখনো পরোপুরি নিশ্চিত হওয়া বাকি রয়েছে।

মৌলবি রজবকে আইএস-কে-এর বাহ্যিক কার্যক্রমের নেতা হিসাবে চিহ্নিত করেছে জাতিসংঘ। সংস্থাটি অনুমান করেছে, আফগানিস্তানে পরিবারের সদস্যসহ সন্ত্রাসী ওই গোষ্ঠীটির অন্তত ছয় হাজার কর্মী ছিল।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “আইএসআইএল-কে তালিবান এবং আন্তর্জাতিক উভয় লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে তাদের আক্রমণে আরও পরিশীলিত হয়ে উঠছে। গোষ্ঠীটি ক্ষমতাসীন তালিবানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে দুর্বল করার জন্য সম্প্রতি হাই-প্রোফাইল হামলা চালানোর দিকে তাদের মনোনিবেশ করছিল।”

গত মাসে, তালিবান নিরাপত্তা সূত্র জানায়, আইএস-কে-এর স্বঘোষিত আমির গাফরি পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী পূর্ব আফগান প্রদেশ কুনারে এক সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের সময় নিহত হয়েছেন। একই সময় পাকিস্তানি গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও ভিওএ-কে গাফারির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছিলেন। তারা বলেছিলেন, সম্পূর্ণ "রহস্যজনক এক পরিস্থিতিতে" গাফারির মৃত্যু হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র গাফারিকে সনাক্তকরণ কিংবা তার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে তথ্যের জন্য এক কোটি ডলার পুরস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক অভিযান তদারককারী, ইউএস সেন্ট্রাল কমান্ড, সেন্টকমের একজন মুখপাত্র, ভয়েস অফ আমেরিকা-কে বলেন, আইএস-কে নেতার মৃত্যুর বিষয়টি এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।

মেজর জন মুর একটি ইমেলে বলেছেন, এই সপ্তাহের শুরুতে আফগানিস্তানে আইএসআইএস-কে-এর একজন নেতাকে হত্যা করা হয়েছে বলে রিপোর্টের বিষয়ে সেন্টকম অবগত, তবে "এই সময়ে দেয়ার মতো অতিরিক্ত আর কোন তথ্য আমাদের হাতে নেই।"

জাতিসংঘের অনুসন্ধান অনুসারে, আল-কায়েদার আফগানিস্তানে ৩০ থেকে ৬০ জন সিনিয়র অপারেটিভ এবং অতিরিক্ত ৪০০ যোদ্ধা রয়েছে বলে মনে করা হয়। পরিবারের সদস্য এবং সমর্থকসহ আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট প্রায় দুই হাজার সদস্য রয়েছে।

তবে, তালিবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জাতিসংঘের এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন যে, তাদের দল আল-কায়েদার সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।