মিয়ানমারের বেসামরিক নেতা অং সান সু চিকে কারাগার থেকে একটি সরকারি ভবনে স্থানান্তর করা হয়েছে। শুক্রবার তার দলের একজন কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন। সু চি, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন।
২০২১ সালের ১ ফেব্রয়ারির পর আটক হন সু চি। এর পর, তাকে মাত্র একবার দেখা গেছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ঝাপসা ছবিতে। ছবিতে, তাকে সামরিক শহর রাজধানী নেপিডোতে একটি খালি আদালত কক্ষে দেখা যায়।
সেই অভ্যুত্থান, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটিকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিয়েছে। জাতিসংঘের মতে, এই সংঘাতের কারণে ১০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির এক কর্মকর্তা শুক্রবার এএফপিকে বলেন, “সোমবার রাতে অং সান সু চি-কে উচ্চ-মানের আবাসন কম্পাউন্ডে স্থানান্তর করা হয়েছে।”
দলের কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে, সু চি মিয়ানমারের নিম্নকক্ষের স্পিকার তি খুন মায়াতের সাথে দেখা করেছেন। আর, চীনের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত দেং শিজুনের সাথেও দেখা করার কথা ছিলো। শিজুন এখন মিয়ানমার সফর করছেন।
অন্য রাজনৈতিক দলের একটি সূত্র জানিয়েছে, সু চি-কে নেপিডোতে একটি ভিআইপি কম্পাউন্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
থাইল্যান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, জুলাইয়ে তিনি সু চির সাথে দেখা করেছেন। তাকে আটক করার পর, জানা মতে কোনো বিদেশী রাষ্ট্রদূতের সাথে এটিই তার প্রথম বৈঠক।
সামরিক জান্তার একজন মুখপাত্র এএফপিকে বলেছেন যে, বৈঠকটি এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে, তবে কী আলোচনা হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানাননি তিনি।
আটক হওয়ার পর থেকে, ৭৮ বছর বয়সী নোবেল বিজয়ী সুচি’র স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। আরো উদ্বেগের বিষয় হলো, জান্তার আদালতে বিচার চলাকালে তাকে প্রায় প্রতিদিন শুনানিতে উপস্থিত থাকতে হয়েছে।
সু চি-কে দুর্নীতি, অবৈধ ওয়াকি টকি রাখা ও করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগে ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
অধিকার গোষ্ঠীগুলো তার বিচারকে রাজনীতি থেকে এই জনপ্রিয় নেত্রীকে সরিয়ে দেয়ার জন্য একটি ষড়যন্ত্র বলে নিন্দা করেছে।
সুচিকে নেপিডোতে এক বছরের বেশি সময় গৃহবন্দী রাখার পর, ২০২২ সালের জুনে রাজধানীর অন্য অংশে একটি কারাগারে স্থানান্তর করা হয়।