ফিলিস্তিনে দখলদারিত্ব বন্ধ ও স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি বাংলাদেশের আহ্বান

ফিলিস্তিনে দখলদারিত্ব বন্ধ ও স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি বাংলাদেশের আহ্বান

ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরাইলের ‘দখলদারিত্বের’ অবসান ঘটাতে পদক্ষেপ নিতে, নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন, নিউইয়র্কে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত। একই সঙ্গে ফিলিস্তিনের জনগণের জন্য স্থায়ী শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে নিরাপত্তা পরিষদের নীতিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করারও আহবান তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) নিউ ইয়র্কে, ওআইসি-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে ফিলিস্তিন প্রশ্নসহ মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের উন্মুক্ত বিতর্কে তিনি এ আহবান বলেন। রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত বলেন, “অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে দ্রুত অবনতিশীল পরিস্থিতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে ওআইসি।”

জেনিন শরণার্থী শিবিরে ইসরাইলের সাম্প্রতিক হামলা বৃদ্ধির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি। তিনি ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে লাগাতার আগ্রাসনের নিন্দা জানান। বলেন, “এই আগ্রাসন বৃদ্ধির ফলে নারী ও শিশুসহ অসংখ্য বেসামরিক নাগরিক হতাহত হয়েছে। পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ বেসামরিক অবকাঠামো ব্যাপক হারে ধ্বংস হয়েছে।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এ ধরনের আগ্রাসন শুধু ফিলিস্তিনিদের মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না, বরং অত্যাবশ্যকীয় সেবা প্রাপ্তির অধিকার ক্ষুণ্ণ করে। একই সঙ্গে তাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সম্ভাবনা কেড়ে নেয় এবং তাদের মানবিক মর্যাদার মারাত্মক অবমাননা করে।”

রাষ্ট্রদূত মুহিত এসব কর্মকাণ্ডের জন্য জরুরি জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বলেন, “জবাবদিহিতার অভাবে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে এ ধরনের কাজ করতে উৎসাহ পাচ্ছে ইসরাইল।” ওআইসি-এর পক্ষ থেকে ইসরাইলের সব ধরনের বসতি স্থাপন কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন এবং ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অপরাধের পূর্ণ, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের দাবি জানান তিনি।

বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত, নিরাপত্তা পরিষদের নীতিমালা ৯০৪ (১৯৯৪) এবং ফিলিস্তিনি বেসামরিক জনগণের সুরক্ষায় জাতিসংঘ মহাসচিবের ২০১৮ সালের রিপোর্টে উল্লেখ করা সুপারিশসহ আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক সুরক্ষায় ওআইসির জরুরি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

ওআইসি-এর অবস্থানের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি, রাষ্ট্রদূত মুহিত ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের প্রতি বাংলাদেশের অটল ও অবিচল সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি একটি স্বাধীন, টেকসই ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ফিলিস্তিনের জনগণের বৈধ আকাঙ্ক্ষার ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী সমাধান অর্জনে বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের অবিচল সমর্থনের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।