বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ফুলপরীকে নির্যাতন—৫ শিক্ষার্থীর ওপর নতুন করে শাস্তি আরোপের নির্দেশ হাইকোর্টের

বাংলাদেশের হাইকোর্ট। (ফাইল ছবি)

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ওই বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বহিষ্কৃত নেত্রীসহ ৫ শিক্ষার্থীর এক বছরের বহিষ্কার আদেশ বাতিল করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নতুন করে শাস্তি আরোপের নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ। আগামী ২৩ অগাস্টের মধ্যে এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

পাঁচ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নেওয়া ব্যবস্থা যথাযথ প্রক্রিয়ায় না হওয়ায় বুধবার (২৬ জুলাই) এ আদেশ দেন বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক-আল-জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।

আদালতে বিশ্বিবিদ্যালয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী গাজী মো. মহসিন। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।

আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি এক বছরের জন্য ৫ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্টস কোড অব কন্ডাক্ট ১৯৮৭–এর বিধান অনুসারে শাস্তির বিষয়ে প্রথম সিদ্ধান্ত নেবেন উপাচার্য। তার শাস্তি যথাযথ হয়েছে কি না সে ব্যাখ্য-বিশ্লেষণের পর চূড়ান্তভাবে শাস্তি বা সাজা আরোপ করবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শৃঙ্খলা কমিটি। শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তে শাস্তি কম-বেশি হতে পারে। কিন্তু এই ৫ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে উপাচার্য কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। বিশ্বিবিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটি সরাসরি শাস্তি আরোপ করেছে। ৫ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করেছে। কিন্তু এই বহিষ্কার আদেশটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় না হওয়ায় তা বাতিল করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় নতুন করে শাস্তি বা সাজা আরোপ করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট”।

এক বছরের বহিষ্কারাদেশের বিষয়ে আদালতের বক্তব্য তুলে ধরে এই আইনজীবী বলেন, “হাইকোর্ট বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাবিধি অনুসারে সাজা বা শাস্তি আরও বেশি দেওয়ার সুযোগ আছে। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই বলেছে, জঘন্য অপরাধ (ফুরপরীকে নির্যাতন) ঘটেছে, তাই আদালত বলেছেন, সে হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে সাজা আরও বেশি দিতে পারে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রতিবেদনে বলেছে, এক বছরের বহিষ্কারাদেশ সর্বোচ্চ সাজা”।

রিটকারী আইনজীবী গাজী মো. মহসীন বলেন, “আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান হচ্ছে, ছাত্রত্ব বাতিল মানে স্থায়ী বহিষ্কার”।