জাতিসংঘের একজন বিশেষজ্ঞ উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় হাজার হাজার নারী ও শিশুকে গণআটকের ঘটনা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি এই নিষ্ঠুর ও অমানবিক পরিস্থিতিতে বসবাসকারী নাগরিকদের প্রত্যাবাসনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সিরিয়ায় ছয় দিনের সফর শেষে জাতিসংঘের সন্ত্রাসবাদ ও মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত ফিওনুয়ালা নি আওলাইন শুক্রবার এক পর্যালোচনা করেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "এটি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য যে ৪০ হাজারের বেশি লোক একটি ডিটেনশন সেন্টারে রয়েছে, যেখানে তাদের মধ্যে ৬০ শতাংশই ১২ বছরের কম বয়সী শিশু। আমরা সেখানে কী ঘটছে তা সম্পর্কে কিছুই জানিনা।"
গত সপ্তাহে সফরকালে নি আওলাইন এবং তার দল কামিশলি, গোয়াইরান ও আল-হোল জেলা এবং আল-মালিকিয়া শহরের কারাগার ও আটক স্থান পরিদর্শন করেন।
বিশাল আল-হোল ক্যাম্পে হাজার হাজার নারী ও শিশু - যাদের বেশিরভাগই কারও স্ত্রী, বিধবা এবং ইসলামিক স্টেট গ্রুপের সদস্যদের সন্তান - বন্দী রয়েছে।
বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশকে জঙ্গিদের পরিবারের সদস্যদের প্রত্যাবাসনের আহ্বান জানিয়ে আসছে। হয় শিবিরের বাসিন্দারা তাদের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে পারছে না, অথবা তাদের নিজ দেশ আইএসের প্রতি সহানুভূতিশীল বা প্রাক্তন যোদ্ধাদের গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক।
শিবির কর্তৃপক্ষ বলছে, ইসলামিক স্টেটের জঙ্গিদের (আইএস) স্ত্রীরা সহিংসতার মাধ্যমে আল-হোল শিবির শাসন করছে। তারা পরাজয়ের কয়েক বছর পরেও গোষ্ঠীটিকে সক্রিয় রাখার চেষ্টা করছে। এছাড়াও, কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তুলেছে, তারা শিবিরে আগুন দিয়েছে, রক্ষীদের হুমকি এবং তাদের অপহরণের চেষ্টা করছে। আইএসে যোগ দেওয়ার জন্যও ছেলেদের পালাতে সহায়তা করেছে।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২১ সালের শুরু থেকে আল-হোল ক্যাম্পে অনেক নারীসহ শতাধিক মানুষ নিহত হয়।
জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৩৬টি দেশে সাত হাজার মানুষকে প্রত্যাবাসন করা হয়েছে, যাদের তিন-চতুর্থাংশই নারী ও শিশু। দাতব্য সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলছে, এই হারে দুটি শিবিরে থাকা সব শিশুকে দেশে ফিরিয়ে নিতে “৩০ বছর পর্যন্ত সময় লাগবে”।
এই প্রতিবেদনের জন্য কিছু তথ্য এপি থেকে নেওয়া হয়েছে।