ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে মতবিরোধ, ঋণ পুনর্গঠনে সীমিত অগ্রগতি এবং ধনী ও দরিদ্র দেশগুলির মধ্যে বিভাজন দারিদ্র্যকে আরও গভীর করার ঝুঁকি নিয়ে সতর্কবার্তার মধ্য দিয়ে মঙ্গলবার জি-২০ অর্থ প্রধানরা ভারতে তাদের আলোচনা শেষ করেছেন।
অনেক দেশ এখনও করোনভাইরাস মহামারী থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। পাশাপাশি ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে পণ্যের দামের তীব্র ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। এই পরিস্থিতি জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা করতে প্রায় অক্ষম, এমন কিছু দরিদ্র দেশকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করেছে।
গান্ধীনগরে অর্থমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের গভর্নরদের সমন্বয়ে দুই দিনের শীর্ষ সম্মেলন শেষে ভারতের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সংবাদদাতাদের বলেন, ২০টি প্রধান অর্থনীতির গ্রুপ তাদের যৌথ বিবৃতিতে একমত হতে ব্যর্থ হয়েছে। "কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিষয়ে আমরা অভিন্ন মত পোষণ করতে পারিনি", তবে গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য বিষয়গুলিতে বেশ অগ্রগতি হয়েছে।
ইউক্রেনের চলমান সংঘাতের দরুন রাশিয়া এবং পশ্চিমের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বিনষ্ট হয়ে যাওয়ার ফলে, খাদ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাপী একটি বিধ্বংসী অর্থনৈতিক প্রভাব তৈরি হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের প্রধান ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা মঙ্গলবার বলেছেন, "জলবায়ু পরিবর্তন, মহামারী এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে বিশ্ব আজ আরও অভিঘাত-প্রবণ এবং ভঙ্গুর হয়ে পড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন রবিবার জোর দিয়ে বলেন, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইউক্রেনের জন্য সমর্থন পুনরায় দ্বিগুণ করা, বিশ্ব অর্থনীতিকে সহায়তা করার "একক সর্বোত্তম" উপায় ছিল।
ইউক্রেন বিষয়ে যে কোনো আলোচনাই ভারতের জন্য উভয়সংকট, কারণ দেশটি রাশিয়ার আক্রমণের নিন্দা করেনি, কিন্তু তারা অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের পাশাপাশি কোয়াড গ্রুপিংয়েরও অংশ।
বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রধান মঙ্গলবার বলেছেন, ধনী ও দরিদ্র দেশগুলির মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিভাজন উন্নয়নশীল বিশ্বে দারিদ্র্যকে আরও বাড়িয়ে তোলার ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য আঞ্চলিক প্রতিষ্ঠানগুলির মতো বহুপাক্ষিক ঋণদাতাদের সংস্কারের প্রচেষ্টা পরবর্তী দশকে ২০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ অবমুক্ত করতে পারে।
বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলির সংস্কার, কর, ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রবিধান এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অভিযোজন সংক্রান্ত অর্থ নিয়েও আলোচনা করেছেন জি-২০ অর্থমন্ত্রীরা।
নিম্ন আয়ের দেশগুলির জন্য ঋণ পুনর্গঠন চুক্তিও একটি মূল আলোচ্য বিষয় ছিল।
বেশ কয়েকটি জি-২০ ভুক্ত দেশ পরামর্শ দিয়েছে, বেইজিং কোনরকম চুক্তির ব্যাপারে অসম্মত ছিল, কিন্তু সীতারামন চীনের এই প্রতিক্রিয়াকে "উৎসাহজনক" বলে অভিহিত করেছেন।
আইএমএফ প্রধান জর্জিয়েভা বলেছেন, ঋণ পুনর্গঠন প্রক্রিয়া "এখনও দ্রুততর এবং আরও কার্যকর হওয়া দরকার।"