সম্পর্ক উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবেলায় ভারত সফরে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি

ভারতের গান্ধীনগরে একটি বিদ্যালয় পরিদর্শনের সময় শিক্ষার্থীদের সাথে মতবিনিময় করেন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গ। ১৬ জুলাই, ২০২৩।

বেইজিং সফরের পর যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন নয় মাসের মধ্যে তৃতীয়বারের মতো ভারতে গেলেন। এবারের সফরে তিনি ঋণ খেলাপির ক্রমবর্ধমান হুমকির মতো বিশ্বব্যাপী নিম্ন আয়ের দেশগুলোর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে জি টোয়েন্টির অর্থমন্ত্রীদের সাথে মিলিত হবেন।

ইয়েলেন তার সফরকালে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে উষ্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন। তিনি দ্রব্যের চাহিদা ও জোগানের বিষয়ে নির্ভরযোগ্যতা, পরিবেশ বান্ধব জ্বালানী পরিবহন এবং অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতার অন্যান্য বিষয় মোকাবেলার জন্য ভিয়েতনামের হ্যানয়ে একটি যাত্রা বিরতি করার পরিকল্পনা করেছেন।

ভারতে ইয়েলেনের সফরের অন্যতম লক্ষ্য অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে থাকা উন্নয়নশীল দেশগুলিতে ঋণ পুনর্বিন্যাসের জন্য চাপ দেয়া, বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ব্যাঙ্কগুলিকে আরও জলবায়ু-কেন্দ্রিক করতে আধুনিকীকরণের জন্য চাপ দেয়া এবং ক্রমবর্ধমান যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ককে আরও গভীরতর করা৷

চীনের সাথে উত্তেজনার সময়ে ইয়েলেনের ঘন ঘন ভারত সফর সেই সম্পর্কের গুরুত্বেরই ইঙ্গিত দেয়।

অন্যদিকে, রাশিয়ার সাথে ভারতের দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কও আরও গভীর হচ্ছে, কারণ ইউক্রেনে ক্রেমলিনের আগ্রাসন অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এবং মিত্র দেশগুলির নিষেধাজ্ঞা এবং রাশিয়ার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করার প্রচেষ্টা সত্ত্বেও, ভারত রাশিয়াকে শাস্তি দেওয়ার প্রচেষ্টায় অংশ নেয়নি এবং রাশিয়ার তেলের মূল্য নির্ধারণে সাতটি গ্রুপ সম্মত হওয়া সত্ত্বেও সেই দেশের সাথে জ্বালানী বাণিজ্য বজায় রাখে, যা রাশিয়ার শ্লথ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার ক্ষেত্রে কিছুটা সাহায্য করেছে।

তবুও, যুক্তরাষ্ট্র ক্রমবর্ধমানভাবে ভারতের উপর নির্ভর করছে এবং দেশটির নেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সম্মান জানিয়ে হোয়াইট হাউজে একটি রাষ্ট্রীয় সফরের আয়োজন করেন, যা দুই দেশের সম্পর্ককে জোরদার করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। দুই নেতা সেসময় উচ্চারণ করেন, যুক্তরাষ্ট্র-ভারত সম্পর্ক এর আগে কখনই এতোটা শক্তিশালী ছিল না, এছাড়া মোদীর যুক্তরাষ্ট্র সফরে দেশ দুটির মধ্যে নতুন বেশ কিছু ব্যবসায়িক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।

ভারত সফরের আগে, ইয়েলেন চীনে এক সপ্তাহ কাটিয়েছেন। সেখানে তিনি দেশটির অর্থ মন্ত্রকের সাথে দেখা করেন এবং পারস্পরিক বাণিজ্য বিধিনিষেধ এবং জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ নিয়ে আলোচনা করেন।

হাডসন ইনস্টিটিউটের একজন সিনিয়র ফেলো হ্যারল্ড ডব্লিউ ফার্চটগট-রথ বলেছেন, ইয়েলেনের ভারত সফর "স্বাভাবিকভাবে তৈরি জোটের প্রতিফলন।"