মারাত্মক জঙ্গি হামলার কবলে পাকিস্তানের সেনা ঘাঁটি

পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের মানচিত্র।

পাকিস্তানের কর্তৃপক্ষ বুধবার বলেছে, অশান্ত দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশের একটি সামরিক ঘাঁটিতে বিদ্রোহী হামলায় কমপক্ষে চার সেনা নিহত এবং অপর পাঁচজন "গুরুতর আহত" হয়েছে।

সেনাবাহিনীর মিডিয়া উইং বলেছে, পাঁচ "সন্ত্রাসী" ভোরে প্রদেশের উত্তর জোব জেলায় "ওই সামরিক ঘাঁটিতে গোপনে ঢোকার" চেষ্টা করেছিল, কিন্তু সেনারা তাদের বাধা দেয়।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "পরবর্তীতে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক গোলাগুলি শুরু হয়, এক পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের সীমানার একটি ছোট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।" বিবৃতিতে আরও বলা হয়, প্রতিশোধমূলক গুলিতে "ভারী অস্ত্রে সজ্জিত" তিন জন হামলাকারী নিহত হয়েছে।বাকি দুই সন্ত্রাসীকে ধরতে, নিরাপত্তা বাহিনীর একটি পরিচ্ছন্নতা তত্পরতা চছে।"

জেলা প্রশাসনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা আজিম কাকার এর আগে নিশ্চিত করেছেন, জঙ্গিরা ঝোব সেনানিবাস এলাকায় হামলা করেছে। তিনি সংবাদদাতাদের বলেন, বেসামরিক লোকজনও ক্রসফায়ারের মধ্যে পড়ে যায়, এতে একজন নারী নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন।

ঝোবের নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, পাঁচজন হামলাকারী নিহত হওয়ার পর, ঘণ্টাব্যাপী অবরোধ শেষ হয়েছে। তারা বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর নয়জন কর্মী নিহত এবং আরও ১৫ জন আহত হয়েছে।

তবে, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা হতাহতের এই সংখ্যা সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেননি।

একটি অপেক্ষাকৃত নতুন জঙ্গি সংগঠন, তেহরিক-ই-জিহাদ পাকিস্তান, সেনাবাহিনীর ঘাঁটিতে হামলার জন্য কৃতিত্ব দাবি করেছে, তবে এর সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করা যায়নি। এই গোষ্ঠীটিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান বা টিটিপি’র সাথে যুক্ত বলে মনে করা হয়, যারা পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে হামলা চালানো নিষিদ্ধ উগ্রবাদী সংগঠনগুলির একটি জোট।

আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী বেলুচিস্তান এবং উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোওয়া প্রদেশে সম্প্রতি জঙ্গি হামলার নাটকীয় উত্থান ঘটেছে। ২০২৩ সালের শুরু থেকে চলা সহিংসতায়, বিশেষ করে আত্মঘাতী বোমা হামলা এবং অন্যান্য হামলায় এ পর্যন্ত ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য।

টিটিপি এবং তথাকথিত বালুচ লিবারেশন আর্মি, উভয়ই যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে তালিকাভুক্ত। এরা এই দুটি প্রদেশসহ পাকিস্তানের অন্যত্র বেশিরভাগ রক্তপাতের জন্য দায়ী।

চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে বিদ্রোহীদের অভিযান ও সংঘর্ষে, ১০০ জনেরও বেশি সেনা কর্মকর্তা ও সৈন্য নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে, পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী।