প্রেম হোক বা ক্রিকেট বিতর্ক আর জেহাদ সঙ্গী ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের নতুন নির্বাচক প্রধানের

ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার অজিত আগরকার।

সদ্য জাতীয় দলের নির্বাচক প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার অজিত আগরকার। সেই সময়ে ক্রিকেট আলোচকরা অজিত আগরকারকে বলতেন অত্যন্ত নির্বিষ এক পেসার। এমন সমালোচনাও হয়েছিল যে শচীন তেন্ডুলকারের কোটায় ভারতীয় দলে টিঁকে রয়েছেন তিনি। মুম্বইয়ের এই পেসারের নামের পাশে অনেক সাফল্য থাকলেও অনেক সময়েই সেগুলি মনে রাখা হয়নি। উল্লেখ্য, জাহির খানের থেকে কম টেস্ট খেলে আগরকার ১০০টি উইকেট নিয়েছিলেন।

এই মুহূর্তে আগরকার শিরোনামে একটাই কারণে, তিনি জাতীয় দলের নির্বাচক প্রধান হয়েই ক্যারিবিয়ান সফরে ডাকেননি কেকেআর-এর রিঙ্কু সিংকে। আগরকারের কমিটির মনে হয়েছে, রিঙ্কুকে আরও ভালভাবে দলে নেওয়া হবে। সেই নিয়ে অবশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় আগরকারকে মুম্বই মাফিয়াও বলছেন অনেকেই।

আগরকার বারবারই বিতর্ক তৈরি করেছেন। একটা সময় মুম্বইয়ের এই প্রাক্তন পেসার, মুম্বই ক্রিকেট দলের নির্বাচক হয়ে নামী তারকাদের বাদ দিয়ে বিতর্কে ইন্ধন দিয়েছিলেন। সেই বাদের তালিকায় ছিলেন টি ২০ দলের সহ অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদবও।

এমনকী ব্যক্তিগত জীবনেও তাঁর বিয়ে নিয়েও বিতর্ক তৈরি করেছিল তাঁর পরিবার। মুসলিম বান্ধবী ফাতিমা ঘাড়িয়ালির সঙ্গে প্রেম ও পরে বিয়ে করতে উদ্যত হওয়ায় তাঁকে পরিবার থেকে বের করে দেওয়া হয়।

দুই পরিবারের কেউ মানতে চায়নি এই সম্পর্ক ও বিবাহ। কিন্তু আগরকার ব্যক্তিগত জীবনে পরিবারের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে জানিয়েছিলেন, বিয়ে করলে ফাতিমাকেই করবেন। সেইসময় সবেমাত্র ভারতীয় দলে থিতু হয়েছেন, তখনই এমন বিতর্ক ধেয়ে আসে জীবনে।

মারাঠি ব্রাক্ষ্মণ পরিবারের ছেলে অজিত কী করে মুসলিম মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক জড়ালেন, সেই নিয়ে পরিবারের সদস্যরা নানা কথা বলেছিলেন। অজিতের পাশে সেইসময় ছিলেন শচীন তেন্ডুলকর। ভারতীয় দলের বাকি সদস্যরাও তাঁর পক্ষেই কথা বলেছিলেন। সেই দলের নেতা ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।

১৯৯৮ সালে অজিতের ক্রিকেট জীবন শুরু। অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে আউট করে কেরিয়ারের প্রথম উইকেট নিয়েছিলেন। সেইসময় তাঁর এক মুসলিম বন্ধু মাজহার ঘাড়িয়ালি বোনকে সঙ্গে করে ম্যাচ দেখতে আসতেন প্রায়ই। ম্যাচ দেখতে আসা বন্ধুর বোনকেই মন দিয়ে ফেলেন ক্রিকেটার।

অজিত এবং ফাতিমার প্রেম সেখান থেকেই। বন্ধুর বোনের সঙ্গে তাঁকে নানা জায়গায় দেখাও যেত। ১৯৯৯ সালের প্রেম, পূর্ণতা পায় ২০০২ সালে। দুই পরিবারের আপত্তির মধ্যেও তাঁদের বিয়ে হয়। ২০০০ সালে ফাতিমা মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি সংস্থায় ম্যানেজমেন্ট উপদেষ্টার কাজ করতেন।

বিয়ের পরে সেই চাকরি ছেড়ে দিলেও ফাতিমা একজন নামী শিক্ষাবিদ। বিভিন্ন কলেজে তিনি লেকচার দিয়ে থাকেন। তাঁদের রাজ নামে এক পুত্র রয়েছে।