বুধবার চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাইওয়ানকে পাউডার কেগে পরিণত করার অভিযোগ এনেছে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র এই স্বশাসিত গণতান্ত্রিক দ্বীপের কাছে ৪৪ কোটি ২ লাখ ডলার মূল্যমানের সামরিক উপকরণ বিক্রি করেছে, যার প্রতিক্রিয়ায় চীন এই অভিযোগ এনেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রক ৩০ মিলিমিটার গুলি ও সংশ্লিষ্ট সরঞ্জাম, তাইওয়ানের সামরিক পরিবহনের যন্ত্রাংশ, কমব্যাট ওয়েপন সিস্টেম ও অন্যান্য রসদ বিক্রির অনুমোদন দেয়। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মুখপাত্র কর্নেল তান কেফেই প্রত্যুত্তরে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র চীনের মৌলিক উদ্বেগকে উপেক্ষা করছে, চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে রূঢ়ভাবে নাক গলাচ্ছে এবং ইচ্ছাকৃতভাবে তাইওয়ান প্রণালীতে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে।”
চীন তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে এবং প্রয়োজন হলে বল প্রয়োগ করে একে দখলে আনার বিষয়টিও দেশটির বিবেচনায় রয়েছে। তান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের কাছে “কঠোর আপত্তি” জানানো হয়েছে।
মন্ত্রকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত বার্তায় তিনি আরো বলেন, “এই উদ্যোগ তাইওয়ানকে ‘গোলাবারুদের পিপায়’ রূপান্তর ও তাইওয়ানের জনগণকে বিপর্যয়ের করাল গ্রাসে নিমজ্জিত করার সমতুল্য।”
যুক্তরাষ্ট্র “এক চায়না” নীতি অবলম্বন করে, যার আওতায় তারা তাইওয়ানের আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার ধারণাকে সমর্থন করে না এবং বেইজিং এর সঙ্গে সমঝোতা অনুযায়ী, দ্বীপটির সঙ্গে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক কূটনীতিক সম্পর্ক রক্ষা করে না। তা সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, তাইওয়ানের জন্য নির্ভরযোগ্য প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করা ও এ দ্বীপের প্রতি যেকোনো ধরনের হুমকির মোকাবিলা করাকে যুক্তরাষ্ট্র “ব্যাপক গুরুত্বের” বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে।
বিক্রি সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানায়, তারা “গ্রহীতার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নের ধারাবাহিক উদ্যোগ ও নির্ভরযোগ্য প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বজায় রাখার প্রচেষ্টাকে সহায়তা করার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয়, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত স্বার্থ রক্ষা হয়েছে।”
যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক উপকরণের পাশাপাশি আগের অর্ডারের অংশ হিসেবে প্রায় ১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার মূল্যমানের এফ-সিক্সটিন যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য উপকরণ কেনার মাধ্যমে তাইওয়ান তাদের অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষা খাতকে পুনরুজ্জীবিত করছে, প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়াকে ঢেলে সাজিয়েছে এবং দেশের সব পুরুষের জন্য ৪ মাস থেকে ঊর্ধ্বে ১ বছর পর্যন্ত বাধ্যতামূলকভাবে সামরিক বাহিনীতে কাজ করার প্রক্রিয়া চালু করেছে।
চীনের সুবিশাল সামরিক বাহিনীর শক্তিমত্তা প্রায় সব বিভাগেই তাইওয়ানের ওপর আধিপত্য স্থাপন করতে সক্ষম। তবে দ্বীপটির কৌশল হচ্ছে চীনা বাহিনীকে ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিহত করা, যতক্ষণ না বাইরে থেকে সাহায্য আসছে।