ফোর্থ অফ জুলাইয়ের ইতিহাস এবং ঐতিহ্য

৪ জুলাই নিউইয়র্কের ইস্ট রিভারের ওপর আতশবাজির দৃশ্য। নিউইয়র্কের সামিট ওয়ান ভ্যান্ডারবিল্ট অবজারভেশনের ৯১ তলা থেকে। ৪ জুলাই, ২০২২। ফাইল ছবি।

ফোর্থ অফ জুলাইয়ের গোড়ায় রয়েছে আমেরিকানত্ব, যার মধ্যে আছে প্যারেড, খোলা জায়গায় রান্না এবং পার্টি, ঠাণ্ডা বিয়ার আর অবশ্যই আতশবাজি।

ছুটির দিনটি সেকেন্ড কন্টিনেন্টাল কংগ্রেসের সর্বসম্মতভাবে ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাইয়ে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র গ্রহণকে উদযাপন করে। এই দলিল গ্রেট ব্রিটেন থেকে উপনিবেশগুলোর বিচ্ছিন্নতা ঘোষণা করে।

লাইব্রেরি অফ কংগ্রেস অনুসারে, এর এক বছর পরে ফিলাডেলফিয়ার একটি স্বতঃস্ফূর্ত উদযাপন আমেরিকান স্বাধীনতার বার্ষিকীকে চিহ্নিত করেছিল।

কিন্তু ১৮১২ সালের যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত দেশ জুড়ে এটি সাধারণভাবে পালিত হয়নি। এরপর এটি ক্রমশ ব্যাপকভাবে পালিত হতে শুরু করে। কংগ্রেসের লাইব্রেরি থেকে জানা যায়, ১৯ শতকের প্রধান ঐতিহাসিক ঘটনাগুলো, যেমন এরি খাল এবং বাল্টিমোরের জন্য যুগান্তকারী অনুষ্ঠান এবং ওহাইও রেলপথ- এগুলোর উদযাপন ফোর্থ অফ জুলাই উৎসবের সাথে মিলিত হয়।

শুরু থেকেই স্বাধীনতা দিবসের বড় একটি অংশ ছিল পাইরোটেকনিকের প্রদর্শনী।

আমেরিকা একটি জাতিরাষ্ট্র হওয়ার কয়েক শতাব্দী আগে থেকেই আতশবাজি ছিল। আমেরিকান পাইরোটেকনিক্স অ্যাসোসিয়েশন বলে, অনেক ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করেন, আতশবাজি প্রথম ফুটানো হয়েছিল খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতাব্দীতে। প্রাচীন চীনে বাঁশের ডালপালা আগুনে নিক্ষেপ করা হতো, ফাঁপা বাতাসের পকেট অতিরিক্ত উত্তপ্ত হওয়ার সাথে সাথে বিস্ফোরণ ঘটতো।

জর্জ ওয়াশিংটন থেকে জো বাইডেন পর্যন্ত প্রেসিডেন্টরা জুলাইয়ের ৪ তারিখে জাতিরাষ্ট্রের জন্ম উদযাপন করেছেন; ব্যতিক্রম ছিলেন শুধুমাত্র একজনঃ অ্যাডামস।

গত দুই দশক ধরে ভোক্তা পর্যায়ে আতশবাজি বিক্রি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।

আমেরিকান পাইরোটেকনিক্স এসোসিয়েশনের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০০০ সালে আমেরিকান ভোক্তারা আতশবাজিতে ৪০ কোটি ৭০ লাখ ডলার খরচ করেছে। ২০২২ সালের মধ্যে সংখ্যাটি বেড়ে ২৩০ কোটিতে দাঁড়িয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় সবচেয়ে বড় বৃদ্ধি ঘটে যখন কিনা জনসমাবেশে আতশবাজি ফুটানো বন্ধ করে দেয়া হয়। ভোক্তা পর্যায়ে বিক্রয় ২০১৯ সালে ১০০ কোটি ডলার থেকে ২০২০ সালে ১৯০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়।

ব্যাপক সচেতনতা প্রচেষ্টা সত্ত্বেও হাজার হাজার আমেরিকান প্রতি বছর আতশবাজির কারণে আহত হয়। ইউএস কনজিউমার প্রোডাক্ট সেফটি কমিশন তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ২০২২ সালে ১০ হাজার ২০০ মানুষকে ইমার্জেন্সি রুমে চিকিৎসা করা হয়েছিল এবং ১১ জনের মৃত্যুর জন্য আতশবাজিকে দায়ী করা হয়েছিল। প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে ৪ জুলাইয়ের কাছাকাছি সময়ে।