মহারাষ্ট্র মন্ত্রীসভায় যোগ দিলেন এনসিপি-র অজিত পাওয়ার, একনাথ শিন্ডের মুখ্যমন্ত্রীত্ব প্রশ্নের সামনে

মহারাষ্ট্র মন্ত্রীসভায় যোগ দিলেন এনসিপি-র অজিত পাওয়ার।

ভারতের মহারাষ্ট্রের রাজ্য রাজনীতি এই মুহূর্তে টানটান উত্তেজনার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। এনসিপি-র অজিত পাওয়ার সরকারে যোগ দেওয়ায় মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে একনাথ শিন্ডের ভবিষৎ ঘনিয়ে এল বলে বেশ কিছু দিন ধরেই বলে আসছিল প্রতিপক্ষ শিবসেনার উদ্ধব গোষ্ঠীর নেতারা। রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত মাস দুই আগেই ঘোষণা করেছিলেন অজিত পাওয়ারের সরকারে যোগদান সময়ের অপেক্ষা।

সোমবার ৩ জুলকি শিবসেনার মুখপত্র সামনায় লেখা হয়েছে, "শিন্ডে ব্যাগপত্র গোছাতে শুরু করুন। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবন থেকে বিদায় নেওয়ার সময় ঘনিয়ে এসেছে।" সামনাতে আরও লেখা হয়েছে, "শিন্ডের স্থলাভিষিক্ত হবেন এবার অজিত পাওয়ার।"

প্রতিপক্ষ শিবিরের মুখপত্রের বক্তব্য যে উড়িয়ে দেওয়ার নয় শিন্ডের পদক্ষেপেই তা স্পষ্ট। মহারাষ্ট্র সচিবালয়ে সোমবার বিচিত্র পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজের চেম্বারেই বসেছিলেন। কিন্তু ভিড় এবং অফিসারদের ব্যস্ততা ছিল উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিশের ঘরে। সেখানেই হাজির অজিত পাওয়ার, ছগন ভুজবলের মতো এনসিপি নেতারা। ছিলেন বিজেপির মন্ত্রী ও বিধায়কেরা।

তবে ব্যস্ত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডেও। সোমবারই মুম্বইয়ের শিবাজি পার্কে দলের সভা ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সভা মঞ্চে হাজির থাকতে বলা হয়েছিল দলের সব মন্ত্রী, বিধায়ক ও সাংসদকে। শিন্ডের সঙ্গে এখন ৪০ জন বিধায়ক আছেন।

অন্যদিকে, অজিত পাওয়ার রবিবার উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নেওয়ার পর দাবি করেন, তাঁর সঙ্গেও কম করে এনসিপির ৪০ জন বিধায়ক আছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে এই পরিস্থিতিতে প্রমাদ গুনছেন শিন্ডে। তড়িঘড়ি তাই শিবাজী পার্কে সভা এবং বৈঠকের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

সোমবার বিকালে বৈঠক ডেকেছিলেন শরদ পাওয়ারও। সেখানে এনসিপি বিধায়কদের ডাকা হয়েছে। তবে বিধায়কদের নিয়ে মূল শক্তি পরীক্ষা হবে ৬ তারিখে ডাকা মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এনসিপি পরিষদীয় দল অথবা বিরোধী দলনেতার চেম্বারে। সোমবারই অনেকটা স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে অজিতের সঙ্গে কত জন আছে। তবে একথাও ঠিক দলত্যাগ বিরোধী আইন বাঁচিয়ে এগোতে অনেকেই সময় নেবেন। অজিত বারে বারে দাবি করেছেন তাঁর সঙ্গে ৪০ জন বিধায়কের সমর্থন আছে।

তাৎপর্যপূর্ণ হল শরদ-সহ দলের কেউই অজিতের এই দাবি নসাৎ করেননি। বরং শরদের কথায় স্পষ্ট তিনি ভাইপোর দাবি মেনে নিয়েছেন। রবিবার বারে বারেই বলেছেন, "বিধায়কেরা যেদিকেই থাকুন না কেন আমার সঙ্গে মানুষ আছে। নতুন করে দল গড়ব।"

রাজনৈতিক মহলের পর্যবেক্ষণ মহারাষ্ট্রের রাজনীতির চলতি বাস্তবতা হল, এনসিপির ভাঙন রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে এবং তাঁর অনুগামী বিধায়কদের। আদালতের রায়ে তাঁর ১৬ বিধায়কের সদস্যপদ খারিজ হয়ে গেলে মুখ্যমন্ত্রীর গদি আঁকড়ে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে তাঁর পক্ষে। অন্যদিকে অজিত পাওয়ার বহুদিন ধরেই মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছেন।