টানা বর্ষণ ও ভারতের মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে, বাংলাদেশের সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকায় নেমে এসেছে পাহাড়ি ঢল। বৃষ্টি ও উজানের ঢলে হাওড় এলাকার নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ডুবে গেছে জেলার নিম্নাঞ্চল।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শনিবার (১ জুলাই) ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ২৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সুনামগঞ্জের ছাতকে সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৬৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাকি সব নদীর পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, গত দুই দিনের বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বেড়ছে।
টানা বর্ষণ ও মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাতের প্রভাবে, সড়ক ডুবিয়ে হু-হু করে ঢলের পানি ঢুকছে হাওর ও লোকালয়ে। ঘোলাটে পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে হাওর এলাকা। বিভিন্ন পাহাড়ি ছড়া দিয়ে ঢলের পানি সুনামগঞ্জের মধ্যনগর, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার, ছাতক, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সীমান্ত নদী দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে।
মধ্যনগর উপজেলার উত্তর বংশীকূন্ডা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরু নবী তালুকদার জানান, “শুক্রবার (৩০ জুন) ভোর থেকে মেঘালয় পাহাড়ের মহেশখলা ছড়া দিয়ে প্রবলবেগে ঢলের পানি ঢুকছে। এতে এলাকার রাস্তাঘাট পানিতে ডুবে গেছে।”
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুল হাওলাদার শনিবার বলেন, “আগামী ৪৮ ঘণ্টায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে কোনো কোনো নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমা অতিক্রম করে স্বল্পমেয়াদি বন্যা হতে পারে। এদিকে, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।”
আবহাওয়া অফিসের বুলেটিনে জানানো হয় যে রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ঢাকা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালি, নোয়াখালি, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়োহাওয়াসহ অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এজন্য এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বুলেটিনে জানানো হয়।
বুলেটিনে বলা হয়, মৌসুমী বায়ুর অক্ষ পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের উপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।