২০১৫ সালে গণকবর আবিষ্কারের ঘটনায় ৪ থাই নাগরিককে মালয়েশিয়ার কাছে  হস্তান্তর 

থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়া

২০১৫ সালে থাইল্যান্ড সীমান্তের একটি পাহাড়ি জঙ্গলে রোহিঙ্গা মুসলিম ও বাংলাদেশীদের গণকবর উদ্ধারের ঘটনায় মালয়েশিয়ার মানবপাচার বিরোধী আইনে চার থাই নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুটিয়ন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ২০১৭ সালে উত্তর পার্লিস রাজ্যের ওয়াং কেলিয়ানে সংঘটিত মর্মান্তিক ঘটনার পর সরকার যে ১০ জন থাই নাগরিককে হস্তান্তরের দাবি জানিয়েছিল তাদের মধ্যে এই চারজন ছিলেন। ঐ হত্যার ঘটনায় দেশবাসী হতবাক হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, থাই কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং অভিযোগের মুখোমুখি হওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।


২০১৫ সালের মে মাসে মালয়েশিয়ার পুলিশ ওয়াং কেলিয়ানে একটি জঙ্গলে মানব পাচারকারীদের ব্যবহৃত একটি পরিত্যক্ত জায়গায় শিবির আবিষ্কারের ঘোষণা দেয় এবং পরে সেখানে গণকবর থেকে ১৩৯ টি মৃতদেহ আবিষ্কার করে। একই মাসের শুরুর দিকে থাই পুলিশ সীমান্তের থাই অংশ থেকে একই ধরনের আরেকটি গণকবর আবিষ্কার করে এবং অগভীর কবর থেকে ৩৬ টি মৃতদেহ উদ্ধার করেছিল।

ঐ গণকবরগুলো আবিষ্কারের ফলে মানব পাচারকারীদের দ্বারা পরিচালিত জঙ্গলে তৈরি করা গোপন শিবিরের নেটওয়ার্কগুলি প্রকাশ পায়। পাচারকারীরা মানুষকে বন্দী করে ঐসব মানুষের পরিবারের কাছ থেকে বছরের পর বছর ধরে মুক্তিপণ আদায় করছিল । পাচারকারীদের নেটওয়ার্কের শিকার যারা হয়েছেন তাদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু বা বাংলাদেশ থেকে আসা দরিদ্র অভিবাসী যারা উন্নত জীবনের সন্ধানে তাদের মাতৃভূমি ছেড়ে পালিয়ে আসা অসংখ্য মানুষের অংশবিশেষ।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সশস্ত্র পুলিশ শুক্রবার এই চার জনকে পার্লিসের একটি নিম্ন আদালতে নিয়ে যায়, যেখানে তাদের বিরুদ্ধে মানব পাচারের অভিযোগ আনা হয়। দোষী সাব্যস্ত হলে তাদের ১৫ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।

মালয়েশিয়ার ইংরেজি দৈনিক নিউ স্ট্রেইটস টাইমস ও দ্য স্টার জানিয়েছে, ৩০ থেকে ৫৮ বছর বয়সী ওই চারজনের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের দুই নাগরিককে ওয়াং কেলিয়ানে পাচারকরার অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদের কোনও আবেদন রেকর্ড করা হয়নি এবং তাদের জামিন দেওয়া হয়নি। তাদের মামলা শুনানির জন্য হাইকোর্টে স্থানান্তর করা হবে।

মালয়েশিয়া ইতোমধ্যে ওয়াং কেলিয়ান শিবিরের ঘটনার সাথে সম্পর্কিত পাঁচ জন বিদেশীকে পাচার সংশ্লিষ্ট অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে। এদিকে থাইল্যান্ড পাচারের অপরাধে নয়জন থাই কর্মকর্তাসহ ৬২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছে।