মিয়ানমারের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা কর্তৃক বিদেশী উৎস থেকে অস্ত্র ও অন্যান্য পণ্য কেনার জন্য ব্যবহৃত দুটি ব্যাংকের ওপর বুধবার নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এক বিবৃতিতে বলেছে, সামরিক বাহিনী তার "নিষ্ঠুর দমন-পীড়ন" সমর্থন করার জন্য, অস্ত্র তৈরির উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম এবং কাঁচামাল ক্রয় এবং আমদানি করতে নিষেধাজ্ঞার অধীনে থাকা রাশিয়ার সংস্থাগুলিসহ বিদেশী উৎসের উপর নির্ভর করে আসছিল।
২০২১ সালের অভ্যুত্থানে সামরিক নেতারা ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রক কমপক্ষে ১০০ কোটি ডলার মূল্যের পণ্য ও উপকরণ আমদানি করেছে বলে অভিযোগ করেছে ওয়াশিংটন।
নতুন এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মিয়ানমার ফরেন ট্রেড ব্যাংক (এমএফটিবি) এবং মিয়ানমার ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাংক (এমআইসিবি)। ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট বলছে, ব্যাংক দুটি মিয়ানমা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজ (এমওজিই) সহ রাজস্ব-উৎপাদনকারী রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগগুলিকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে।
ব্যাংকগুলো মিয়ানমার সরকারের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা গ্রহণ ও প্রেরণ করে থাকে।
২০২১ সালে একটি অভ্যুত্থানে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে জান্তা সরকার। ক্ষমতা দখলের পর তারা নানারকম দমন পীড়নের মাধ্যমে হাজার হাজার বিরোধীদের হত্যা করে চলেছে। এর পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশগুলি মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের উপর কয়েক দফা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।
এই ঘোষণার আগে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার একজন মুখপাত্র বলেছেন, নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা নিয়ে তারা মোটেও বিচলিত নয়।
জাও মিন তুন মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেল এমডব্লিউডিকে বলেন, আমাদের দেশ এর আগেও নিষেধাজ্ঞার সম্মুখীন হয়েছে, মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে, তারা কোনই ক্ষতির সম্মুখীন হবে না।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র "শুধু অর্থনীতি ও রাজনীতিতে অসুবিধা সৃষ্টি করার জন্যই এই কাজ করছে।"
অন্যদিকে, থাই সূত্রের বরাত দিয়ে ব্যাংকক বিজনেস নিউজ বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা থাইল্যান্ড এবং এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কারণ স্থানীয় ব্যাংকগুলির সাথে তাদের আন্তঃসংযোগ রয়েছে।
তবে, যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বলেছে, থাইল্যান্ড কিংবা অন্যান্য দেশের উপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কীভাবে কমানো যায়, তা সহ মিয়ানমারের বিষয়ে থাই সরকারের সাথে তাদের নিয়মিত কথোপকথন হচ্ছে।