হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত এক আফগান নাগরিকের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল তালিবান

আফগানিস্তানের কাবুলে টহলরত একজন তালিবান যোদ্ধার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক মহিলা। ২৬ ডিসেম্বর, ২০২২। (ফাইল ছবি)

মঙ্গলবার আফগানিস্তানের তালিবান সরকার পাঁচ জনকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। মনে করা হচ্ছে দ্বিতীয় বারের মতো ২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর এ ছিল দ্বিতীয় প্রকাশ্য মৃত্যুদন্ড প্রদান।

এই ধরনের প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টিকে "নিষ্ঠুর, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি" উল্লেখ করে, জাতিসংঘের করা তীব্র সমালোচনাকে উপেক্ষা করে মৃত্যুদণ্ডটি কার্যকর করা হল।

তালিবান সুপ্রিম কোর্ট এক বিবৃতিতে ঘোষণা করেছে, লাঘমান প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে ঐ আফগান নাগরিককে পাঁচ ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। নিহত ওই পাঁচজন আফগান ব্যক্তির বেশিরভাগই একই পরিবারের সদস্য।

এতে আরও বলা হয়েছে, বিপুল সংখ্যক তালিবান বিচারক এবং সরকারী কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সেখানকার অধিবাসীরাও প্রাদেশিক রাজধানী মিহতারলামের প্রধান মসজিদে ওই মৃত্যুদন্ড প্রত্যক্ষ করেছেন।

আদালত আর কোন বিশদ বিবরণ উল্লেখ করেনি। শুধু এটুকুই বলেছে যে তালিবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা "সতর্কতার সাথে" পরীক্ষা করে এটি অনুমোদন করার পর, বিচারিক আদেশ কার্যকর করা হয়।

গত ডিসেম্বরে আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলে ফারাহ প্রদেশে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তির প্রথম প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল। অভিযুক্ত অপরাধীর বাবাকে দিয়ে একটি অ্যাসল্ট রাইফেলের মাধ্যমে ওই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।

সেই সময়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা করেছিল এবং তালিবানকে অবিলম্বে মৃত্যুদণ্ড বন্ধ করতে এবং অন্য সব প্রকাশ্য শাস্তি নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিল।

প্রায় দুই বছর আগে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর থেকে, তালিবান সরকার ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থায় ইসলামী আইন বা শরিয়ার কঠোর ব্যাখ্যা প্রয়োগ করেছে। রাজধানী কাবুল এবং আফগানিস্তানের বেশ কয়েকটি প্রদেশে ফুটবল স্টেডিয়ামে শত শত দর্শকের সামনে তারা প্রকাশ্যে বহু পুরুষ ও নারীকে বেত্রাঘাত করেছে।

ভুক্তভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যভিচার, চুরি এবং বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার মতো "নৈতিক অপরাধের" অভিযোগ আনা হয়েছিল।

এর আগেও, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তানে পূর্ববর্তী তালিবান সরকারের অধীনে জনসমক্ষে বেত্রাঘাত এবং মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছিল।