রবিবার থাইল্যান্ডের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আয়োজিত এক অনানুষ্ঠানিক আঞ্চলিক শান্তি আলোচনায় মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অংশ নিয়েছেন। আসিয়ানের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য দেশগুলো ব্যাপকভাবে সমালোচিত এই আলোচনা বর্জন করেছে।
শুধু কম্বোডিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় যোগ দেওয়ার ইচ্ছার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নোবেল পুরষ্কার বিজয়ী অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে সামরিক বাহিনী সু চিকে কারাগারে পাঠায়। আসিয়ানের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী সাবেক সরকারের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিরোধী পক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করতে না পারায় মিয়ানমারের জেনারেলদের প্রায় ২ বছর ধরে আসিয়ানের শীর্ষ পর্যায়ের কোনো বৈঠকে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না।
তবে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, যিনি নিজেই সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছিলেন, তিনি মিয়ানমারের জান্তার নিয়োগ দেওয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী থান সোয়েকে ১০ সদস্যের আসিয়ান ব্লকের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের আলোচনায় যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান। এ বৈঠক সম্পর্কে জানেন, এরকম ২ জন সূত্র রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
রবিবার মিয়ানমারের জান্তার মুখপাত্রের সঙ্গে এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য যোগাযোগের চেষ্টা চালানো হলেও তিনি সাড়া দেননি।
থাইল্যান্ডের এই উদ্যোগের সমালোচনাকারীরা জানান, এতে মিয়ানমারের সামরিক সরকারকে বৈধতা দেওয়ার ঝুঁকি সৃষ্টি হয়েছে। এটি অনভিপ্রেত, কারণ এটি “ফাইভ পয়েন্ট কনসেনসাস” নামে পরিচিত আসিয়ানের আনুষ্ঠানিক শান্তি উদ্যোগের আওতার বাইরে।
কম্বোডিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রাক সোখোন এই বৈঠকে অংশ নেবার কথা ছিল, শুক্রবার এক সরকারি বার্তায় এ তথ্য জানা গেছে।
আসিয়ানের অন্যান্য সদস্যরা থাইল্যান্ডের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে, যার মধ্যে এ বছরের চেয়ার ইন্দোনেশিয়া এবং সিঙ্গাপুরও অন্তর্ভুক্ত। সিঙ্গাপুরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিভিয়ান বালাকৃষ্ণান শুক্রবার জানান, “জান্তার সঙ্গে সম্মেলন পর্যায়ে, বা এমন কী পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়েও আবারও আলোচনা শুরু করার মতো পরিস্থিতি এখনো আসেনি।”
মিয়ানমারে সু চি’র প্রশাসনের প্রতি অনুগতদের নিয়ে গঠিত বিরোধী পক্ষ ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট থাইল্যান্ডের এই উদ্যোগের প্রতি নিন্দা জানিয়েছে।
শনিবার এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “অবৈধ জান্তাকে আলোচনায় আমন্ত্রণ জানালে তা মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে কোনো অবদান রাখবে না।”