কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় 'বিটলস-এর চূড়ান্ত রেকর্ড' প্রকাশের কথা জানালেন পল ম্যাকার্টনি

১৯৬৬ সালের ৩০ জুনে তোলা এই ফাইল ছবিতে দ্য বিটলস ব্যান্ডের সদস্যদের দেখা যাচ্ছে। টোকিওর বুদোকানে সঙ্গীত পরিবেশন করছেন (বাম থেকে ডানে) পল ম্যাকার্টনি, রিংগো স্টার, জর্জ হ্যারিসন ও জন লেনন।

পল ম্যাকার্টনি মঙ্গলবার প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে বিবিসিকে জানান, এ বছরই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় “বিটলস-এর চূড়ান্ত রেকর্ড” প্রকাশ করা হবে।

“জন (লেনন) এর একটি ডেমো ছিল আমাদের কাছে, যেটি নিয়ে আমরা কাজ করে চূড়ান্ত রূপ দিয়েছি”, জানান ম্যাকার্টনি, যিনি আগামী সপ্তাহে ৮১ বছরে পা দিতে যাচ্ছেন।

লেনন, ম্যাকার্টনি, জর্জ হ্যারিসন ও রিংগো স্টারের ব্যান্ড দ্য বিটলস ১৯৭০ সালে ভেঙে যায়। এরপর চার সদস্য নিজ নিজ একক ক্যারিয়ার গড়লেও আর কখনো ব্যান্ড পুনর্গঠন করেননি।

১৯৮০ সালে ৪০ বছর বয়সে নিউ ইয়র্কে গুলির আঘাতে মারা যান লেনন এবং ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০০১ সালে ৫৮ বছর বয়সে মারা যান হ্যারিসন।

ম্যাকার্টনি গানটির নাম না জানালেও বিবিসির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, খুব সম্ভবত এটি হতে যাচ্ছে ১৯৭৮ সালে লেননের রচনা করা গান “নাউ অ্যান্ড দেন।”

মৃত্যুর এক বছর আগে ম্যাকার্টনির জন্য একটি ক্যাসেটে বেশ কিছু গান রেকর্ড করেন জন লেনন। ১৯৯৪ সালে লেননের বিধবা স্ত্রী ইয়োকো ওনো ম্যাকার্টনির হাতে এই ক্যাসেটটি তুলে দেন।

প্রযোজক জেফ লিন ক্যাসেটের ২টি গান “ফ্রি অ্যাজ আ বার্ড” ও “রিয়েল লাভ” নিয়ে কাজ করেন এবং এ গানগুলো যথাক্রমে ১৯৯৫ ও ১৯৯৬ সালে প্রকাশ করা হয়।

“নাউ অ্যান্ড দেন” গানটিও প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে ডেমোতে ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজের কারণে এ প্রকল্প বাতিল হআ

ম্যাকার্টনি এর আগেও এই গানের কাজ শেষ করার ইচ্ছার কথা বলেছেন। তিনি জানান, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তাকে এ কাজ শেষ করার সুযোগ এনে দিয়েছে।

২০২১ সালের প্রামাণ্য চিত্র “দ্য বিটলস: গেট ব্যাক” এ চিত্রপরিচালক পিটার জ্যাকসনের সঙ্গে কাজ করেন ম্যাকার্টনি। সে সময় লেননের কণ্ঠকে পিয়ানোর শব্দ থেকে আলাদা করার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হয়।

ম্যাকার্টনি বলেন, “যখন আমরা বিটলস এর শেষ গানটি রেকর্ড করার কথা ভাবলাম, তখন জনের একটি ডেমো নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিলাম, যেখান থেকে আমরা তার কণ্ঠকে আলাদা করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায় একে পূর্ণাঙ্গ রূপ দিতে পারব।”

সঙ্গীতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কয়েকজন কপিরাইট লঙ্ঘনের ঝুঁকির কারণে এ বিষয়টির প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন, আবার কেউ কেউ এর সক্ষমতার প্রশংসা করেছেন।

ম্যাকার্টনি বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার “কিছুটা ভীতিকর, কিন্তু একইসঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ, কারণ এটাই ভবিষ্যৎ। দেখতে হবে এটি আমাদেরকে কোথায় নিয়ে যায়।”