আত্মীয়দের বাসায় বেড়াতে এবং ভালো কাজের আশায় অবৈধ পথে ভারত গিয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ শেষে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছে ৫০ জন বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী।
বৃহস্পতিবার (১ জুন) সন্ধ্যায় তাদের ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বাংলাদেশের বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
হস্তান্তর প্রক্রিয়া তদারক করতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বাংলাদেশের উপ হাইকমিশনের কাউন্সেলর তুসিতা চাকমা ওই কিশোর–কিশোরীদের সঙ্গে বাংলাদেশে আসেন।
এ সময় বেনাপোল চেকপোস্টে উপস্থিত ছিলেন বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীব, বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি কামাল হোসেন ভূঁইয়া ও চেকপোস্ট বিজিবি ক্যাম্পের কমান্ডার সুবেদার মাহাবুবুর রহমান প্রমূখ।
ফেরত আসাদের মধ্যে কিশোর ২৮ জন ও কিশোরী ২২ জন। তাদের মধ্যে ৪৬ জনের বয়স ৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে এবং বাকি ৪ জনের বয়স ২০ বছরের মধ্যে। বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা তারা।
তুসিতা চাকমা বলেন, বিভিন্ন সময়ে দালালের খপ্পরে পড়ে ভালো কাজের আশায়, আবার কেউ আত্মীয়দের বাড়িতে বেড়াতে তারা ভারতে যায়। বিভিন্ন অঞ্চলে বাসা বাড়িতে কাজ করার সময় তারা ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হয়। বিভিন্ন মেয়াদে সাজাভোগের পর আজ তারা দেশে ফিরে এসেছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আহসান হাবীব বলেন, পাসপোর্ট ছাড়াই অবৈধপথে সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে ভিন্ন ভিন্ন পেশার কাজ করার সময় পুলিশের হাতে আটক হয় তারা। পরে পুলিশ তাদের আদালতে পাঠালে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়। সাজা শেষ হলে তাদের ছাড়িয়ে সে দেশের একটি বেসরকারি এনজিও নিজেদের শেল্টার হোমে রাখে। পরে দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে তাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাদের বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ফিরে আসারা জানায়, তারা বিভিন্ন মেয়াদে ভারতে কারাভোগ করেছে। দুই দেশের বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে আজ দেশে ফিরেছে।
পরে সব পক্রিয়া শেষে তিনটি এনজিও বেনাপোল পোর্ট থানা থেকে তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য যশোর শেল্টার হোমে নিয়ে যায়।
ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরেছেন আরও ৫ বাংলাদেশি
দুই বছর কারাভোগ শেষে বৃহস্পতিবার সকালে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন আরও ৫ জন বাংলাদেশি।
ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন—ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জের নরেশ শীলের ছেলে পলাশ শীল (৩৬), বাগেরহাট জেলার বাহার উদ্দিনের মেয়ে বেবী বেগম(৩২), ময়মনসিংহ জেলার আব্দুস সালামের মেয়ে শিরিন বেগম(৩৩)। শেরপুর জেলার হাসমত আলীর মেয়ে রীতা মন্ডল (৩৯) ও কক্সবাজার জেলার জাফর আলীর ছেলে আইয়ুব আলী (৩৬)।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবিব জানান, ভারতীয় পেট্রোপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ সকালে তাদের বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
তিনি বলেন, দুই বছর আগে কোনো বৈধ কাগজপত্র ছাড়াই ভারতে প্রবেশ করায় ভারতীয় পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে।