রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি—ছাত্রলীগ নেতাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ সালের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অঙ্গ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এক নেতাসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বুধবার (৩১ মে) সকালে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার বিজয় কুমার বসাক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষে রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম মতিহার ও চন্দ্রিমা থানায় মামলাগুলো করেন।

অভিযুক্তদের মধ্যে ছাত্রলীগ নেতা, সরকারি বিসিএস কর্মকর্তা, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন।

তারা হলেন-ছাত্রলীগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ সম্পাদক হাসিবুল ইসলাম শান্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র এনামুল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মো. স্বপন হোসেন, বরিশালের গৌরনদী উপজেলা সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ আবু হানিফ। তিনি ৩৮তম বিসিএসের নন-ক্যাডার কর্মকর্তা।

অন্যরা হলেন—মো. তানভীর আহমেদ, কাওসার আলী বিদ্যুৎ, মো. মাইনুল ইসলাম, মো. আব্দুর রকিব, মো. ইসরাফিল হোসেন, জাহিদ আল হাসান সিয়াম, রূপম সরকার।

বাকিদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

এদের মধ্যে হাসিবুল, শেখ আবু হানিফ, এনামুল হক ও স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, মো. ইসরাফিল হোসেন ৭০ হাজার টাকার বিনিময়ে জাহিদ আল হাসান সিয়ামের প্রক্সি প্রার্থী হিসেবে পরীক্ষায় অংশ নেন।

তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের ৪২৪ নম্বর কক্ষ থেকে আটক করেন।

এ ছাড়া, হাসিবুল ইসলাম শান্ত এনামুল হককে ৫০ হাজার টাকায় নিয়োগ দেন। তিনি প্রধান প্রার্থী তানভীর আহমেদের পক্ষে প্রক্সি দেন।

শেখ আবু হানিফকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন থেকে আটক করা হয়। তিনি আসল প্রার্থী রূপম সরকারের পক্ষে হাজির হন।

ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে ছাত্রলীগের রাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু বলেন, আমরা কিছুক্ষণ আগে বিষয়টি জানতে পেরেছি, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আবদুস সালাম বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মামলা করেছি। এখন বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিজয় কুমার বসাক বলেন, গতকাল যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা একজনকে গ্রেপ্তার করেছি। তবে তিনি মূল অপরাধী নন। আশা করছি শিগগিরই মূল অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারব। একই সঙ্গে জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।