উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম কেসিএনএ জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদারদের সামরিক গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য তারা জুনে একটি সামরিক পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ঘোষণা দিয়েছে।
ক্ষমতাসীন ওয়ার্কার্স পার্টির সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান রি পিয়ং চোল যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সামরিক মহড়ার নিন্দা করে বলেছেন, এটি প্রকাশ্যে তাদের “আগ্রাসনের বেপরোয়া উচ্চাকাঙ্ক্ষার” বহিঃপ্রকাশ।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, শিগগিরই উৎক্ষেপণ হতে যাওয়া স্যাটেলাইটটি উত্তর কোরিয়ার অন্যান্য নজরদারি প্রযুক্তির সাথে "ট্র্যাকিং, মনিটরিংয়ের জন্য অপরিহার্য... যুক্তরাষ্ট্র ও তার বাহিনীর বিপজ্জনক সামরিক কর্মকাণ্ডকে রিয়েল টাইমে আগাম মোকাবেলা করার জন্য।“
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়া তিন সপ্তাহের বিশাল সামরিক মহড়া শুরু করে। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে এটা করা হয়। উত্তর কোরিয়া তাদের ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ বৃদ্ধি করেছে।
পিয়ংইয়ং সোমবার জাপানের কোস্ট গার্ডকে জানায়, তারা আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নেতা কিম জং উন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের চূড়ান্ত প্রস্তুতি অনুমোদন করেছেন।
উত্তর কোরিয়ার এই ঘোষণার জবাবে জাপান বলেছে, পিয়ংইয়ংয়ের পূর্ববর্তী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবের লঙ্ঘন হবে এই উৎক্ষেপণ।
জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক তাদের স্থল ও সমুদ্রভিত্তিক ব্যালিস্টিক মিসাইল ইন্টারসেপ্টর ইউনিটকে তাদের ভূখণ্ডের জন্য হুমকি স্বরূপ যে কোনো বস্তু ভূপাতিত করার নির্দেশ দিয়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উৎক্ষেপণটি হলুদ সাগর, পূর্ব চীন সাগর এবং ফিলিপাইন সাগরের লুজোন দ্বীপের পূর্বাঞ্চলের জলসীমায় প্রভাব ফেলতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার কার্যালয় জানিয়েছে, তিনি তার সরকারকে উৎক্ষেপণ থেকে যেকোনো তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের নির্দেশ দিয়েছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রক সোমবার এক বিবৃতিতে, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিরুদ্ধে উত্তর কোরিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, তাদের পরিকল্পনা এরকম চললে উত্তর কোরিয়াকে “যথাযথ মূল্য” দিতে হবে।
সোমবার দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের প্রধান পারমাণবিক দূতরা টেলিফোনে কথা বলেছেন। দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, রাষ্ট্রদূতরা উত্তর কোরিয়াকে “অবৈধ উৎক্ষেপণ” থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন, যা আঞ্চলিক শান্তিকে হুমকির মুখে ফেলবে।
উত্তর কোরিয়ার প্রধান মিত্র চীন ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় উত্তেজনা নিরসনের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছে।
এই নিবন্ধের জন্য কিছু তথ্য এপি এবং রয়টার্স থেকে নেয়া হয়েছে।