তুরস্কে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হয়েছে

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট ও পিপলস অ্যালায়েন্সের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী রিজেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের সমর্থকরা তুরস্কের ইস্তাম্বুলে একটি নির্বাচনী জনসভায় যোগ দেয়ার সময় স্লোগান দিচ্ছে; ১৩ মে, ২০২৩।

এক ঐতিহাসিক পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন তুরস্কের নাগরিকরা। রবিবারের এই নির্বাচন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলে ধারণা করা হচ্ছে। আর দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট রিজেপ তাইয়িপ এরদোয়ানের জন্য এই নির্বাচন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিতে পারে।

এই নির্বাচন, হয় ক্রমবর্ধমানভাবে কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠা এরদোয়ানকে আরো পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় থাকা অনুমোদন করবে; অথবা এই নেটো সদস্য দেশটিতে বিরোধী প্রার্থীদের বিজয়ী করে, তাদের ভাষায়, গণতন্ত্রের পথে নিয়ে যাবে।

স্থানীয় সময় সকাল ৮টা (জিএমটি ০৫০০) থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। শেষ হওয়ার কথা বিকেল ৫টায়।স্থানীয় সময় রাত ৯টায় নিষেধাজ্ঞা তুলে না নেয়াপর্যন্ত আংশিক ফলাফল প্রকাশ করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

জনমত জরিপে দেখা গেছে,২০ বছরের শাসনকালে প্রথমবারের মতো ৬৯ বছর বয়সী জনতুষ্টীবাদী এরদোয়ান তার প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে দৌড়ে পিছিয়ে পড়ছেন। জনমত জরিপে, মধ্য-বামপন্থী,ধর্মনিরপেক্ষ রিপাবলিকান পিপলস পার্টিবা সিএইচপির প্রার্থী ৭৪ বছরবয়সী নেতা কামালকিলিকদারোগলু কিছুটাএগিয়ে রয়েছেন।তিনি ইউনাইটেড অপজিশন অ্যালায়েন্সেরও প্রার্থী।এবারের ভোটগ্রহণে কোনোপ্রার্থী যদি ৫০ শতাংশেরবেশি ভোট না পান, তবে বিজয়ী নির্ধারণের জন্যআগামী ২৮ মে আবার ভোটগ্রহণ করা হবে।

তুরস্ক প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার শতবার্ষিকী উদযাপনের বছর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই নির্বাচন। নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৬ কোটি ৪০ লাখ। এর মধ্যে ৩৪লাখ ভোটার দেশের বাইরে অবস্থান করেন। ঐতিহ্য অনুযায়ী তুরস্কে ভোটার উপস্থিতি অনেক বেশি হয়ে থাকে।যে সব দেশে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সমাবেশের স্বাধীনতা রুদ্ধ থাকে, সাধারণত সে ধরণের দেশের নির্বাচনে এমন নাগরিক অংশগ্রহণ দেখা যায়।

এই নির্বাচন এমন এক সময়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যখন দেশটি অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।সমালোচকরা এই পরিস্থিতির জন্য সরকারের অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং জীবন যাপনের ব্যয় বৃদ্ধিতে সৃষ্ট তীব্র সংকটকে দায়ী করছেন।

আন্তর্জাতিকভাবে,এই নির্বাচনকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তারা দেখতে চাইছে, রাষ্ট্রের প্রায় সকল ক্ষমতা যার হাতে কেন্দ্রীভূত, এমন একজন নেতাকে ক্ষমতাচ্যুত করারজন্য ঐক্যবদ্ধ বিরোধী জোটের সক্ষমতা রয়েছে কি না।

প্রধান কুর্দি রাজনৈতিক দল বর্তমানে তুরস্কের দ্বিতীয় বড় রাজনৈতিক শক্তি। এই দলটি রয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক মের্চায় এবং কিলিকদারোগলুকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সমর্থন করছে। সরকার এই দলের কর্মী-সমর্থকদের গ্রেপ্তার করছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছে।

এদিকে, প্রায় ৩০ লাখ মানুষ ভূমিকম্প এলাকা ছেড়ে অন্যপ্রদেশে চলে গেছে। কিন্তু মাত্র ১ লাখ ৩৩ হাজার মানুষ তাদের নতুন অবস্থানে ভোট দেয়ার জন্য নিবন্ধন করেছে। যারা ভূমিকম্প এলাকায় রয়ে গেছেন, তারা, ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়া স্কুল প্রাঙ্গণে নির্মিত অস্থায়ী ভোটকেন্দ্রে ভোট দেবেন।