গত মার্চের শেষের দিকে, তাইওয়ানের সাবেক প্রেসিডেন্ট, মা ইং-জিউ, চীনে একটি ঐতিহাসিক সফর করেন। ১৯৪৯ সালের পর তাইওয়ানের সাবেক কিংবা ক্ষমতাসীন নেতাদের মধ্যে তিনিই প্রথম মূল ভূখণ্ডে পা রাখলেন।
২০০৮ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালন করেন মা। তিনি বলেন যে তিনি হুনান প্রদেশে তার পৈতৃক জন্মভূমি এবং চীনের কয়েকটি শহরে যাবার তার ইচ্ছা ছিল।
কিন্তু তাঁর সফরে, তাইওয়ান এবং চীনের অনন্য সম্পর্কের বিষয়ে এবং কীভাবে তারা উভয়ই "এক চীন" এর অংশ, সে সম্পর্কে তার মন্তব্যের দিকেই সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেয়া হয়েছিল।
অনেক চীনা পরিবার যারা জাতীয়তাবাদী কুওমিনতাং, বা কেএমটি, পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের সাথে চলে গিয়েছিল, তাদের জন্য দুই পক্ষকে এক দেশে পরিণত হওয়া একটি আজীবন স্বপ্ন ছিল, কিন্তু সেই স্বপ্ন ছিল স্নায়ুযুদ্ধের রাজনীতি দ্বারা বাধাগ্রস্ত।
সমসাময়িক তাইওয়ানে, তাইওয়ানের বাসিন্দাদের একটি ক্ষুদ্র সংখ্যালঘু, যাদের অধিকাংশই ৭২ বছর বয়সী মা-এর বয়স্ক কিংবা সমসাময়িক, তারা ছাড়া বাকিদের মধ্যে একটি অখণ্ড চীনের স্বপ্ন সবই অধরাই রয়ে গেছে।
এই পরিবর্তনটি তুলনামূলকভাবে দ্রুত হয়েছে। তাইওয়ানের ন্যাশনাল চেংচি ইউনিভার্সিটির দীর্ঘকাল ধরে চলমান এক পরিচিতি জরিপ অনুসারে, ১৯৯২ সালের শেষের দিকে, তাইওয়ানের এক চতুর্থাংশ বাসিন্দা এখনও নিজেদেরকে "চীনা" এবং অপর ৪৬% "তাইওয়ানি এবং চাইনিজ" হিসাবে দেখেন। কিন্তু সেই সংখ্যাগুলি গত ৩০ বছরে তীব্রভাবে নেমে এসেছে, যথাক্রমে মাত্র ২.৭% এবং ৩২.৯%’তে।
পরিবর্তে, ৬০% এরও বেশি উত্তরদাতাদের ২০২২ সালে "তাইওয়ানি" হিসাবে চিহ্নিত করা হয়, যা ১৯৯২ সালের মাত্র ১৭.৬6% থেকে বেড়ে এখন ৬০% হয়েছে। কারণ ১৯৯৬ সালে গণতন্ত্রীকরণের পর, দ্বীপ দেশটিতে একটি নতুন জাতীয়তাবাদ ভিত্তি পেয়েছে।
কেএমটি এবং তাইওয়ানের অন্যান্য প্রধান রাজনৈতিক দল, ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টি, এটি অনুসরণ করেছে, এবং এখন হয় চীনের সাথে একীকরণকে একটি দূরবর্তী লক্ষ্য কিংবা সম্পূর্ণ অবাঞ্ছিত হিসাবে দেখছে।
এমনকি তাইওয়ান তার নতুন পরিচয় খুঁজে পেলেও, দেশটির রাজনৈতিক দলগুলি এখনও চীনে অবস্থিত একটি শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার দ্বারা আকৃতি লাভ করছে।
সাম্রাজ্যের পতনের পর ১৯১২ সালে চীন প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বিজয়ী চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকে তাইওয়ানে পালানোর আগে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগের অশান্ত দশকগুলোতে সেই সরকার চীনের নেতৃত্ব দিয়েছিল।
তবে, বাস্তবতা হল সময়ের সাথে সাথে এটি পরিবর্তন করতে হয়েছে, কারণ চীনের বর্তমান সরকার তাইওয়ানের বেশিরভাগ বাসিন্দাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।