ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসকে শনিবার ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজার মুকুট পরিয়ে দেয়া হয়, ঠিক যেমনটা তাঁর আগের অনেক রাজাকে পরিয়ে দেয়া হয়েছিল। এর আগে, ব্রিটেনে সর্বশেষ রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছিল ৭০ বছর আগে, সে সময় চার্লসের মা দ্বিতীয় এলিজাবেথকে রানীর মুকুট পরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
পোশাকধারী পাদ্রী, প্রার্থনা, জাঁকজমকপূর্ণ ও মহিমাম্বিত সঙ্গীত এবং অল্পবয়সী ছেলে-মেয়েদের উচ্চকিত কণ্ঠে গাওয়া সুরের মূর্ছনায় মূর্ত হয়ে ফুটে ওঠে রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানটি।
সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ টেলিভিশন এবং ইন্টারনেটে রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানটি সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন।
চার্লসের মুকুটটি ছিল একটি ২.২ কেজি (৫ পাউন্ড) ওজনের সোনার মুকুট, যা নানারকম মূল্যবান রত্ন দিয়ে সজ্জিত। ১৬৬১ সালে রাজা দ্বিতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেকের সময় মুকুটটি প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল।
রাজ্যাভিষেকের শেষের দিকে অবশ্য তিনি আরেকটি মুকুট পরেছিলেন, যেটি তাঁর পূর্বসূরিরা নিয়মিত আনুষ্ঠানিক আয়োজন উপলক্ষ্যে পরতেন।
অনুষ্ঠানে চার্লসের সহধর্মিণী ক্যামিলাকেও মুকুট পরানো হয়। তিনি মুকুট পরে রাজার সামনে গিয়ে তাঁকে কুর্নিশ করেন।
যাইহোক, রাজ্যাভিষেকের অত্যন্ত ব্যয়বহুল ও জমকালো এই আয়োজনে সবাই যে সন্তুষ্ট ছিল, তা নয়। বিশেষ করে, ব্রিটেনের তরুণ সমাজের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বিড়ম্বনা রয়েছে যে, বিদ্যমান রাজতন্ত্র তার উপযোগিতা এবং প্রাসঙ্গিকতাকে ছাড়িয়ে গেছে। তার উল্লাসকারী জনতার মধ্যে কিছু সংখ্যক লোক নিঃসন্দেহে উপলক্ষটিকে নিয়ে উপহাস করছিল।
১০৬৬ সাল থেকে ওয়েস্টমিনিস্টারে সমস্ত ব্রিটিশ রাজাদের মুকুট পরানো হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য রাজপরিবারের সদস্য, রাজনীতিবিদ, বিশিষ্ট ব্যক্তি, বিনোদন জগতের তারকা এবং শিল্পীদের রাজ্যাভিষেকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন এবং ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি ওলেনা জেলেন্সকাও ওয়েস্টমিনস্টারে উপস্থিত ছিলেন।
ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে আয়োজিত অনুষ্ঠানটি ছিল পুরানো ঐতিহ্যগুলো ধরে রেখে নতুন কিছু উদ্ভাবনের সংমিশ্রণ।
বিখ্যাত সুরকার অ্যান্ড্রু লয়েড ওয়েবারের নতুন একটি সঙ্গীত অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল, এছাড়া একটি গসপেল দলও তাঁদের সঙ্গীত পরিবেশন করে।
রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠান শেষে, চার্লস এবং ক্যামিলা বাকিংহাম প্যালেসে ফিরে আসেন, যেখানে এই দম্পতি তাঁদের একটি ঐতিহ্যবাহী বারান্দায় উপস্থিত হন।
ব্রিটিশ পুলিশ বলছে, সারাদিনে তাদের ১১ হাজার কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন।