আফগানিস্তান সংকট নিয়ে বৈঠক ডাকলেন জাতিসংঘের প্রধান

আফগানিস্তানের কাবুলে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির একটি ক্লিনিকে সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করছেন অপুষ্টিতে আক্রান্ত মায়েরা৷ ২৬ জানুয়ারী, ২০২৩। (ফাইল ছবি)

সোমবার কাতারে বিভিন্ন দেশের বিশেষ দূতদের সাথে আফগানিস্তানে মানবিক কার্যক্রম কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায়, সে বিষয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুই দিনের আলোচনা শুরু করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। যদিও ক্ষমতাসীন তালিবান সরকার আফগান নারী ও মেয়েদের উপর নিষেধাজ্ঞা এখনো বলবত রেখেছে।

কাতারের রাজধানী দোহায় জাতিসংঘের আহুত রুদ্ধদ্বার বৈঠকটির বিষয়ে মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিচ বলেন, আফগান নারী ও মেয়েদের অধিকার, অন্তর্ভুক্তিমূলক শাসন, সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ এবং মাদক পাচারের মতো বিষয়গুলিতে "সাধারণতার ঐকমত্যে পৌঁছানোই" এর লক্ষ্য।

দুজারিচ আরও বলেছেন, "এই ইস্যুতে তালিবান কর্তৃপক্ষের সাথে কীভাবে একসাথে কাজ করা সম্ভব, সে সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি সাধারণ বোঝাপড়া অর্জনও এই বৈঠকের অন্যতম উদ্দেশ্য।"

যুক্তরাষ্ট্র, চীন, রাশিয়া, সৌদি আরব, পাকিস্তান, ইরান, ভারত, কাতার ও ব্রিটেনসহ প্রায় দুই ডজন দেশের রাষ্ট্রদূত বৈঠকে অংশ নিচ্ছেন।

তালিবান সরকার তার প্রতিনিধিদের সভায় আমন্ত্রণ না করার জন্য এবং প্রতিনিধিদের কাছে তার অবস্থান প্রকাশের "বৈধ অধিকার" থেকে বঞ্চিত করার জন্য আয়োজকদের সমালোচনা করেছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত তালিবানের স্থায়ী প্রতিনিধি সুহেল শাহীন বলেছেন, "আইইএ (ইসলামিক এমিরেট অফ আফগানিস্তানের) প্রতিনিধিদের, অর্থাৎ ইস্যুটির প্রধান পক্ষের অংশগ্রহণ ব্যতীত যে কোনও বৈঠক -– অকার্যকর এবং এমনকি কখনও কখনও বিপরীতমুখী ফল বয়ে আনবে।"

শাহীন তালিবান সরকারের অফিসিয়াল শিরোনাম ব্যবহার করে বলেছেন, "একতরফা সিদ্ধান্ত এবং ভীতিকর আচরণ" সমস্যা সমাধানে কোনভাবেই সাহায্য করতে পারে না।

দোহায় তালিবানের রাজনৈতিক দপ্তরের প্রধান শাহীন বলেন, "এই ধরনের বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত কীভাবে গ্রহণযোগ্য বা বাস্তবায়িত হতে পারে, যখন আমরা এই প্রক্রিয়ার কোনরকম অংশই নই? এটা খুবই বৈষম্যমূলক এবং অন্যায়।"

২০২১ সালের আগস্টে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে, তালিবান নেতৃত্ব আফগান মেয়েদের ষষ্ঠ শ্রেণির পর স্কুলে যাওয়া এবং নারীদের বেশিরভাগ পাবলিক ও দৈনন্দিন জীবনের ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে।

এছাড়া তারা সম্প্রতি আফগান নারী কর্মচারীদের জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সাহায্য গোষ্ঠীর সাথে কাজ করা থেকে বিরত রেখেছে যেখানে প্রায় ২ কোটি ৯০ লাখ মানুষ বা জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ মানবিক সহায়তার উপর নির্ভর করে। কয়েক লাখ আফগান দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে বলে জানা গেছে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার, ১৫-সদস্যের জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ সর্বসম্মতভাবে এর নিন্দা করেছে এবং তালিবানকে দ্রুত আফগান নারী অধিকারের উপর তাদের দমন পীড়ন বন্ধ করার দাবি জানিয়েছে।

তবে, তালিবান পররাষ্ট্র মন্ত্রক এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে এবং জাতিসংঘের সাথে কাজ করা নারীদের উপর নিষেধাজ্ঞাকে সম্পূর্ণরূপে, "আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ সামাজিক বিষয়" বলে উল্লেখ করেছে।