নতুন অস্ত্রবিরতি সত্ত্বেও তৃতীয় সপ্তাহে পা দিলো সুদানের সংঘাত

ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকে পাওয়া এ ছবিতে দেখা যাচ্ছে ব্রিটেনের নাগরিকরা সুদান থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য, ওয়াদি সেইদনা বিমানঘাঁটিতে একটি আরএএফ বিমানে আরোহনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন; ২৭ এপ্রিল ২০২৩।

নতুন করে অস্ত্রবিরতিতে সম্মতি দেয়া সত্ত্বেও, সুদানের সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে তীব্র লড়াই তৃতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে।শনিবার খার্তুমে বোমা বর্ষণের সময় যুদ্ধবিমানগুলো, বিমান বিধ্বংসী কামানের ব্যাপক গোলাবর্ষণের মুখে পড়ে।

গত ১৫ এপ্রিল সুদানের সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তার ডেপুটি, আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সের (আরএসএফ) কমান্ডার মোহাম্মদ হামদান দাগালো-এর অনুগত বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটিতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয় ও অরাজকতায় নিমজ্জি হয়।

সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকেই, বুরহান ও দাগালো বেশ কয়েক দফায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হন। তবে কোনোটিই কার্যকর হয়নি। উভয় পক্ষ একে অপরকে অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘনের জন্য দায়ী করছে।

একটি দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, আফ্রিকান ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ ৩ দিনের অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছিলো।

দক্ষিণ খার্তুমের একজন প্রত্যক্ষদর্শী এএফপিকে জানান, “আবারো সমগ্র মহল্লাজুড়ে যুদ্ধবিমান ও বিমান-বিধ্বংসী অস্ত্রের প্রচণ্ড শব্দে ঘুম ভেঙেছে আমাদের।”

. অপর এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ভোরবেলা থেকেই যুদ্ধ চলছে; বিশেষ করে, লড়াই চলছে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের কাছাকাছি অবস্থিত, রাজধানী খার্তুমের জমজ শহর ওমদুরমান-এ।

এসব লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫১২ জন নিহত এবং ৪ হাজার ১৯৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রক। আশংকা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরো অনেক বেশি হতে পারে।

জাতিসংঘ জানিয়েছে, খার্তুম, ব্লু নাইল স্টেট, উত্তর খোরদোফান এবং দারফুরের অশান্ত পশ্চিমাঞ্চল থেকে যুদ্ধের কারণে এখন পর্যন্ত ৭৫ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

সুদানের হাজার হাজার নাগরিক প্রতিবেশী দেশ মিশর, ইথিওপিয়া, চাদ ও দক্ষিণ সুদানে পালিয়ে গেছেন। আর, বিদেশী রাষ্ট্রগুলো তাদের নাগরিকদের সুদান থেকে ব্যাপক হারে সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।

বুরহান ও দাগালো (হেমেতি নামে পরিচিত) ২০২১ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে নেন এর ফলে, ২০১৯ সালে গণবিক্ষোভের মুখে তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান বশির উৎখাত হওয়ার পর শুরু হওয়া সুদানের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে রূপান্তর প্রক্রিয়া লক্ষ্যচ্যুত হয়।

তবে, পরবর্তীতে দুই জেনারেলের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। সর্বশেষ আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীতে একীভূত করার পরিকল্পনা নিয়ে তারা বিরোধে জড়িয়ে পড়েন।