উচ্চ পর্যায়ের আলোচনার পর আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্ত আবারও চালু হয়েছে

আফগানিস্তানের তালিবান শাসকেরা আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের খাইবার জেলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত ক্রসিং পয়েন্ট তোরখাম বন্ধ করার পরে মহাসড়কের পাশে একটি টার্মিনালে মালবোঝাই ট্রাকগুলো এভাবে দাঁড়িয়ে আছে। ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩।

আফগানিস্তানের তালিবান কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বলেছে, চার দিন বন্ধ রাখার পরে তারা পাকিস্তানের সাথে একটি ব্যস্ত সীমান্ত ক্রসিং আবারও খুলে দিয়েছে। ওই সীমান্ত ক্রসিংয়ে হাজার হাজার ভ্রমণকারী এবং বিভিন্ন মালবোঝাই গাড়ি আটকা পড়েছে। সেগুলোর মধ্যে অনেক খাদ্যসামগ্রী রয়েছে।

তালিবান নেতাদের সাথে সীমান্ত নিরাপত্তা, সন্ত্রাসবাদ দমন এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনার জন্য আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে একটি উচ্চ পর্যায়ের পাকিস্তানি প্রতিনিধিদলের সফরের এক দিন পরে তোরখাম সীমান্ত আবারও খুলে দেওয়া হয়।

দেশ দুটিকে আলাদা করা প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের বেশ কয়েকটি ক্রসিংয়ের মধ্যে একটি হলো তোরখাম। গত রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তালিবান কর্তৃপক্ষ এই সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছিল। তারা পাকিস্তানি অভিবাসন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পাকিস্তানে চিকিৎসা সেবার জন্য যারা যেতে ইচ্ছুক তারাসহ অন্য আফগান ভ্রমণকারীদের সাথে “দুর্ব্যবহার” করার অভিযোগ এনেছিল।

ইসলামাবাদের কর্মকর্তারা এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলেন, তাদের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ কঠোর করার উদ্দেশ্য ছিল টিটিপি নামে পরিচিত নিষিদ্ধ পাকিস্তানি তালিবানের সাথে যুক্ত বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদেরকে মোকাবিলা করা। টিটিপি আফগানিস্তানে তাদের অভয়ারণ্য থেকে পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা করে থাকে।

গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকটি আত্মঘাতী বোমা হামলা এবং অন্য সন্ত্রাসী হামলায় শত শত পাকিস্তানি নিহত হয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। টিটিপি এসব হামলার দায় স্বীকার করেছে।

গত মাসের শেষের দিকে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পেশোয়ারে একটি মসজিদে শক্তিশালী বোমা হামলায় প্রায় ১০০ জন নিহত হন। নিহতদের অধিকাংশই পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন।

মানবাধিকার ও সন্ত্রাসবাদের উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে পাকিস্তানসহ কোনো দেশই আফগানিস্তানের তালিবান সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো স্বীকৃতি দেয়নি।

তবে ইসলামাবাদ সম্প্রতি কাবুলের সাথে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা জোরদার করেছে। নগদ অর্থের সংকটে থাকা তালিবান প্রশাসনকে পাকিস্তানি ভূমি ও সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে দ্বিপক্ষীয় ও ট্রানজিট বাণিজ্যের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় রাজস্ব আয় করতে সহায়তা করছে।