বহু প্রদর্শনীর পর প্রথম আইসিবিএম নিক্ষেপ করলো উত্তর কোরিয়া

পিয়ংইয়ংয়ে সামরিক মহড়ায় হোয়াসং-১৭ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দেখা যাচ্ছে (উত্তর কোরিয়া সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ছবি); ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩।

গত সপ্তাহে শেষ রাতে অনুষ্ঠিত এক সামরিক মহড়ায় আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) সবচেয়ে বড় প্রদর্শনী করে উত্তর কোরিয়া। এর পরই তাদের প্রথম আইসিবিএম নিক্ষেপ করেছে দেশটি। টোকিও জানিয়েছে, এটি উচ্চ গতিপথ দিয়ে জাপানের এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের আওতাভুক্ত অঞ্চলে গিয়ে পড়েছে।

জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এই অস্ত্রটিকে “আইসিবিএম-শ্রেণীভুক্ত” ক্ষেপণাস্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেছে। তারা আরও জানায়, এটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ২৭ মিনিটে হোক্কাইডোর ওশিমা ওশিমা দ্বীপ থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে, সমুদ্রে পতিত হওয়ার আগে, প্রায় ১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে আকাশে ছিলো। কিওডো নিউজ জানিয়েছে, টোকিও সরকার বেইজিং-এ অবস্থিত তাদের দূতাবাসের মাধ্যমে পিয়ংইয়ংয়ের কাছে এই ঘটনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা তার সরকারি বাসভবন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনার নিন্দা জানান এবং মন্তব্য করেন যে এটি একটি “নিন্দনীয় কাণ্ড”, যা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে উসকানি দিচ্ছে।

এই আইসিবিএম-এর সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল এর আগে উত্তর কোরিয়ার সবচেয়ে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষায় ব্যবহৃত “দানব-ক্ষেপণাস্ত্র”র অর্জিত উচ্চতার কাছাকাছি। গত ১৮ নভেম্বর উত্তর কোরিয়া হোয়াসং-১৭ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। ক্ষেপনাস্ত্রটি সর্বোচ্চ ৬ হাজার কিলোমিটার উচ্চতায়, ১ হাজার কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে।

এবার পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রটি ৫ হাজার ৭০০ কিলোমিটার উচ্চতায় উড়ে গিয়ে, প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরত্ব পাড়ি দিয়েছে বলে টোকিও জানিয়েছে। টোকিও আরও জানায়, এটি ১৪ হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে, উত্তর আমেরিকায় পৌঁছানোর সক্ষমতা রাখে।

সোওলের সামরিক বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই দূর পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের কাছাকাছি অবস্থিত সুনান অঞ্চল থেকে স্থানীয় সময় ৫টা ২২ মিনিটে নিক্ষেপ করা হয়।

শনিবার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের আগে, উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রক শুক্রবার সতর্কতা জারি করে বলেছিলো, যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পিত পদক্ষেপগুলো কোরীয় উপদ্বীপকে আবারও “ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার ভয়াবহ ঘূর্ণিতে” ডোবাবে। এসব উদ্যোগের উদাহরণ হিসেবে তারা এ বছর যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার ২০টি যৌথ মহড়ার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে।