উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় ১১ জন সৈন্যকে হত্যা করেছে জিহাদিরা

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তর আলেপ্পো প্রদেশের আফরিন অঞ্চলের উপকণ্ঠে মহড়া দিচ্ছে, হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) জিহাদি গোষ্ঠীর সদস্যরা। ১৩ অক্টোবর, ২০২২। (ফাইল ছবি)

এইচটিএস নামে পরিচিত, হায়াত তাহরির আল-শাম জিহাদি গোষ্ঠীর পৃথক আক্রমণে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ১১ জন সৈন্য নিহত হয়েছে। বুধবার একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা এ কথা জানিয়েছে।

ব্রিটেন-ভিত্তিক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, "এইচটিএস সিরিয়ার একটি সামরিক চৌকিতে শেল ও রকেট নিক্ষেপ করেছে। হামলায় ইদলিব প্রদেশের কাফর রুমার কাছে আট সেনা নিহত হয়েছে।"

সংস্থাটি পরে রিপোর্ট করেছে, একই প্রদেশের কাফর নাবলের কাছে "স্নাইপার ফায়ারে তিনজন সিরীয় সৈন্য নিহত হয়েছে।" তারা বলছে, ওই হামলার জন্যও এইচটিএস জিহাদিরা দায়ী।

তবে, সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম তাৎক্ষণিকভাবে হামলার কোনো খবর দেয়নি।

সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের প্রায় অর্ধেক এবং প্রতিবেশী প্রদেশ আলেপ্পো, হামা এবং লাতাকিয়া সীমান্তবর্তী এলাকায় এইচটিএস এবং অন্যান্য বিদ্রোহী দলগুলোর আধিপত্য রয়েছে।

ইদলিব অঞ্চলে প্রায় ত্রিশ লাখ মানুষ বাস করতো, বর্তমানে যাদের প্রায় অর্ধেকই বাস্তুচ্যুত।

অবজার্ভেটারির প্রধান রামি আবদেল রহমান বার্তা সংস্থা এএফপি-কে বলেছেন, ২০২২ সালের শেষ থেকে, জিহাদিরা "আঙ্কারা এবং দামেস্কের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে ইদলিবে সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করেছে।"

তিনি বলেন, চলতি বছরের শুরু থেকে শাসক বাহিনী এবং জিহাদি দলগুলোর মধ্যে গুলি বিনিময় ও সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই সরকারপন্থী বাহিনী। এছাড়া নিহত জিহাদিদের একজন ফরাসি নাগরিক বলে তিনি জানিয়েছেন।

গৃহযুদ্ধের শুরুতে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারকে পতনের বিদ্রোহী প্রচেষ্টাকে সমর্থন করা শুরু করলে, আঙ্কারা দামেস্কের জাত শত্রু হয়ে ওঠে।

আঙ্কারা কখনই কট্টরপন্থী গোষ্ঠী এইচটিএসকে প্রকাশ্যে সমর্থন না করলেও, বিশ্বাস করা হয় তারা এইচটিএস বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে চলে।

কিন্তু ডিসেম্বরের শেষের দিকে তুরস্ক ও সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রীরা মস্কোতে যুগান্তকারী এক বৈঠক করেন - ২০১১ সালের পর এই ধরনের বৈঠক এটাই প্রথম।

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ মারা গেছে, এছাড়া সিরিয়ার যুদ্ধ-পূর্ব জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

পর্যায়ক্রমিক সংঘর্ষ সত্ত্বেও, মস্কো এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় ২০২০ সালে মূলত উত্তর-পশ্চিমে একটি যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরিত হয়।