রাশিয়ার বিরোধিতাকে উপেক্ষা করে বুধবার ইউক্রেনের ঐতিহাসিক কেন্দ্র ও বন্দর নগরী ওডেসাকে "কৃষ্ণ সাগরের মুক্তা" হিসাবে বর্ণনা করে, বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে ইউনেস্কো।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থাটির বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ২১টি সদস্য রাষ্ট্র শহরের মনোনীত এলাকাগুলিকে অনুমোদন দিয়েছে। ছয়টি রাষ্ট্র এর পক্ষে, একটি বিপক্ষে এবং ১৪টি রাষ্ট্র ভোটদানে বিরত ছিল।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেন্সকি ইউনেস্কোর এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। রাশিয়ার বোমা হামলা থেকে রক্ষা করার জন্য, গত অক্টোবরে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় শহরটিকে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করেছিলেন তিনি।
এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, "আজ ওডেসা ইউনেস্কোর সুরক্ষা পেয়েছে। আমি অংশীদারদের প্রতি কৃতজ্ঞ যারা আমাদের এই মুক্তাকে রাশিয়ার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করেছে।"
রাশিয়ার আক্রমণের পর থেকে, ইউক্রেনীয়রা বালির ব্যাগ এবং ব্যারিকেড দিয়ে শহরটির স্মৃতিস্তম্ভ এবং ভবনগুলিকে রক্ষা জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে।
সংস্থাটি বলেছে, যুদ্ধের শুরু থেকে ক্ষতির মুখে থাকা ওডেসা মিউজিয়াম অফ ফাইন আর্টস এবং ওডেসা মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্টের মেরামত কাজে ইতোমধ্যে তারা সহায়তা করেছে।
১৮ শতকের শেষের দিকে রাশিয়ার সম্রাজ্ঞী ক্যাথরিন দ্য গ্রেট আদেশ দেন, ওডেসা দেশটির আধুনিক সামুদ্রিক প্রবেশদ্বার হবে। তারপরই শহরটি বিকশিত হতে শুরু করে।
তবে শহরটির উপর রাশিয়ার সাংস্কৃতিক প্রভাবের বিস্তৃতি একটি বিতর্কিত বিষয়।
ইউক্রেনের সংস্কৃতি মন্ত্রী অলেক্সান্ডার তাকাচেঙ্কো এবং ওডেসার মেয়র গেন্নাদি ট্রুখানভ, বার্তা সংস্থা এএফপি-কে লেখা এক খোলা চিঠিতে এর প্রতিবাদ করে বলেছেন, রুশ সম্রাজ্ঞীর আগমনের অনেক আগেই শহরটি সমৃদ্ধ ছিল।
তারা বলেন, “পঞ্চদশ শতকের সময় থেকেই বন্দর নগরী হিসাবে ওডেসার ক্রমাগত বিকাশ হয়েছিল। সে সময় শহরটি হাডজিবেই নামে পরিচিত ছিল”।
সিদ্ধান্তটি গৃহীত হওয়ার পর, ইউনেস্কোতে নিযুক্ত রুশ মিশন এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, "পশ্চিমের চাপে" এবং "প্রক্রিয়ার নিয়ম উপেক্ষা করে" এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ওডেসা ছাড়াও, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের সেন্ট-সোফিয়া ক্যাথেড্রাল এবং পশ্চিমের শহর লভিভের ঐতিহাসিক কেন্দ্রসহ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় আরও ছয়টি ইউক্রেনীয় স্থানের নাম উত্কীর্ণ করা হয়েছে।