আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালিবান বৃহস্পতিবার একটি চীনের পেট্রোলিয়াম কোম্পানির সাথে তাদের প্রথম আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। চীনের পেট্রোলিয়াম কোম্পানি দেশটির উত্তরাঞ্চলে তেলের মজুদ উত্তোলন ও উন্নয়নে কাজ করবে।
আফগানিস্তানের রাজধানীতে অনুষ্ঠিত তালিবানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কাবুলে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ওয়াং ইউ-এর মধ্যকার ঐ চুক্তি-স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হয়। ২০২১ সালের আগস্ট মাসে ইসলামী গোষ্ঠীটি ক্ষমতা দখলের পর আফগানিস্তানে এটাই প্রথম বড় ধরনের বিদেশি বিনিয়োগ চুক্তি।
তালিবানের খনিজসম্পদ মন্ত্রী শাহাবুদ্দিন দিলাওয়ার অনুষ্ঠানে বলেন, শিনজিয়াং সেন্ট্রাল এশিয়া পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড গ্যাস কোম্পানি (কেইপিআইসি)এর সঙ্গে চুক্তির ফলে আমু নদীর অববাহিকায় তেল উত্তোলনের জন্য বছরে দেশটিতে ১৫ কোটি ডলারের চীনা বিনিয়োগ আসবে।
তিনি বলেন, ঐ চুক্তির আওতায় থাকবে উত্তর সারিপোল, জৌজজান ও ফারিয়াব প্রদেশের সাড়ে ৪ হাজার বর্গ কিলোমিটার এলাকা এবং এতে প্রায় ৩ হাজার আফগান জনগণের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
দিলাওয়ার বলেন, চীনের সঙ্গে ২৫ বছরের এই চুক্তিটি তিন বছরের মধ্যেই বিনিয়োগ ৫৪ কোটি আমেরিকান ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পে তালিবান প্রশাসনের ২০ শতাংশ অংশীদারিত্ব থাকবে এবং তা ৭৫ শতাংশে উন্নীত করারও বিধান রয়েছে।
চীনা রাষ্ট্রদূত “সফল” ঐ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের প্রশংসা করে বলেন, বেইজিং ও কাবুলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নে এটা এক উত্তম সূচনা।
ওয়াং চীনা কোম্পানিকে চুক্তির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে তার দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা পূরণের ক্ষেত্রে “আফগানিস্তানের আইন কঠোরভাবে মেনে চলার” আহ্বান জানান।
তালিবান মন্ত্রী বলেন, এই চুক্তির আওতায় আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে অপরিশোধিত তেল প্রক্রিয়াজাত করণ করা হবে এবং চীনের এই কোম্পানিটি দেশে একটি শোধনাগার তৈরি করবে।
আফগানিস্তানের অব্যবহৃত সম্পদের পরিমাণ ১ লক্ষ কোটি ডলারেরও বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিদেশী বিনিয়োগকারীরা প্রকৃতিক গ্যাস সম্পদ খতিয়ে দেখার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করলেও দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে দশকের পর দশক ধরে সংঘাত চলার কারণে অনেককেই এই ধরনের উদ্যোগে নিতে নিরুৎসাহিত করেছে।