চীন বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন বাতিল করবে বলে জানানোর পর, মঙ্গলবার চীনের অনেক মানুষ উৎফুল্ল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং বিদেশের ফ্লাইট বুকিং দিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছে। এমন পদক্ষেপের মাধ্যমে চীন প্রায় তিন বছরের স্বআরোপিত আইসোলেশনের অবসান ঘটাল।
সোমবার এক আচমকা পদক্ষেপে চীন জানায় যে ৮ জানুয়ারি থেকে আগত যাত্রীদের আর কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে না। এর মাধ্যমে দেশটি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কট্টরপন্থী বিধিনিষেধ আরও শিথিল করল। এমন বিধিনিষেধ দেশটির অর্থনীতিকে নাজেহাল করেছে এবং দেশব্যাপী প্রতিবাদের সূচনা করে।
চীনের নিয়ন্ত্রণ নীতির মূল ভিত্তিগুলো ভেঙে পড়ায় দেশ জুড়েই সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্তৃপক্ষও এমন কথা স্বীকার করেছে যে সংক্রমণ পুরোপুরি চিহ্নিত করা “অসম্ভব” এবং সংক্রমণ বিষয়ে ব্যাপক নিন্দিত সরকারি পরিসংখ্যান পরিত্যাগ করছে।
চীন গত সপ্তাহে কোভিডের কারণে হওয়া মৃত্যু নির্ধারণের মানদণ্ডকেও আরও সংকীর্ণ করেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এমন পদক্ষেপ কোভিডের কারণে হওয়া মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা গোপন করবে।
তা সত্ত্বেও, চীনের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীরা বিধিনিষেধ অবসানের প্রতি উল্লসিত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। বিধিনিষেধগুলো ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দেশটিকে মোটাদাগে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল।
এমন খবরে বিদেশের ফ্লাইট বিষয়ে অনলাইনে সার্চও ব্যাপক বৃদ্ধি পায়। ট্রাভেল প্ল্যাটফর্ম টংচেং-এ সার্চের সংখ্যা ৮৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পায় এবং ভিসা বিষয়ে খোঁজখবর করা দশগুণ বৃদ্ধি পায় বলে, রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গিয়েছে।
প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্ম ট্রিপ ডট কম গ্রুপ জানায় যে, ঘোষণার আধাঘন্টার মধ্যেই বিদেশের জনপ্রিয় গন্তব্যস্থলগুলো বিষয়ে সার্চের সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যবহারকারীরা বিশেষ করে ম্যাকাও, হংকং, জাপান, থাইল্যান্ড ও দক্ষিণ কোরিয়া নিয়ে বেশি উৎসাহী ছিলেন।
ঘোষণাটি কার্যত চীনের শুন্য-কোভিড নীতির গণপরীক্ষা, কঠোর লকডাউন ও দীর্ঘ কোয়ারেন্টিন এর অবসান ঘটাল। এমন নীতি সরবরাহ ব্যবস্থাকে নাকাল করেছে এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশের সাথে ব্যবসায়িক যোগাযোগকে ব্যাহত করেছে।