দেড় শ’রও বেশি ক্ষুধার্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ একটি অচল নৌকা ইন্দোনেশিয়ার কাছে দেখা গেছে

২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা একটি কাঠের নৌকায় ইন্দোনেশিয়ার উত্তর আচের ক্রুয়েং গেউকুইহ বন্দরে পৌঁছানোর পর।

একটি রোহিঙ্গা সক্রিয়বাদী গ্রুপ বুধবার জানিয়েছে, ১৫০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বহনকারী একটি অচল নৌকা ইন্দোনেশিয়ার আচে প্রদেশের কাছে আটকে রয়েছে। দু'দিন আগে আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের আশেপাশে ভারতীয় জলসীমায় খাদ্য ও খাবার পানি ছাড়াই ভেসে যাওয়ার খবর পাওয়া যায়।

আরাকান প্রকল্পের পরিচালক ক্রিস লেওয়া ভিওএ-কে জানিয়েছেন, “নৌকাটি এখন আর ভারতের এসএআর অঞ্চলে নেই তবে নৌকাটি মালয়েশিয়ার এসএআর অঞ্চলের আচের কাছাকাছিতে পৌঁছেছে।” আরাকান প্রকল্পরোহিঙ্গাদের সমর্থনে কাজ করে এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চারপাশে শরণার্থীদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে।

১৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে নৌকাটিকে সহায়তা করার জন্য ঐ অঞ্চলের দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়। নৌকাটি বাংলাদেশ থেকে যাত্রা করেছিল এবং নৌকার ইঞ্জিন অচল হয়ে যাওয়ায় আন্দামান সাগরের আশেপাশে দুই সপ্তাহ ধরে তা ভাসছিল।

জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বেশ কয়েকটি প্রতিবেদনে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে নৌকাটিতে ইতোমধ্যে কয়েক ডজন লোক মারা গেছেন এবং যারা বেঁচে আছেনতারা খাদ্য ও পানির অভাবে ক্ষুধা-তৃষ্ণা এবং অসুস্থতায় ভুগছেন। জীবন বাঁচাতে এবং আরও মৃত্যু এড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন ।”

মঙ্গলবার, রোহিঙ্গা সহায়তা গ্রুপ এবং বাংলাদেশ ভিত্তিক এক রোহিঙ্গা সক্রিয়বাদীকে উদ্ধৃত করে, সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে নৌকাটির ইঞ্জিন বেশ কয়েক দিন ধরে অচল অবস্থায় রয়েছে এবং প্রায় ১৫০ জন শরণার্থীকে নিয়ে নৌকাটি ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জে আটকা পড়ে আছে।

বাংলাদেশের কক্সবাজারের এক রোহিঙ্গা সক্রিয়কর্মী মোহাম্মদ রেজুয়ান খান মিয়ানমারের সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসার পর একটি অপরিচ্ছন্ন শরণার্থী শিবিরে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার সঙ্গে বাস করছেন। তিনি মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ঐ নৌযানের ক্যাপ্টেনের সঙ্গে রোববার তিনি ফোনে কথা বলেন এবং জানতে পারেন যে আট থেকে ১০ দিন ধরে তাদের খাবার ও পানি নেই এবং তিনজন মারা গেছে।

খান বলেন, নৌকার ক্যাপ্টেন তাকে বলেন, “দয়া করে অবিলম্বে আমাদের উদ্ধারের ব্যবস্থা করুন। আমরা অনাহারে মরে যাচ্ছি।”