বিক্ষোভের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি ইরানের অনেক তরুণ

অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস দ্বারা নিযুক্ত নয় এমন এক ব্যক্তির তোলা এবং ইরানের বাইরে এপি দ্বারা প্রাপ্ত এই ছবিতে শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে একটি বিক্ষোভে শিক্ষার্থীদের দেখা যাচ্ছে, অক্টোবর ৭, ২০২২।

ডাক্তার, র‍্যাপ শিল্পী এবং একজন ফুটবলারসহ প্রায় দুই ডজন ইরানি নাগরিক ফাঁসির ঝুঁকিতে রয়েছেন। তেহরান বিক্ষোভ দমনের জন্য একটি ভীতি প্রদর্শনের কৌশল হিসাবে মৃত্যুদণ্ডকে ব্যবহার করছে।

গত সপ্তাহে, মোহসেন শেকারি এবং মাজিদরেজা রাহনাভার্ডের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। উভয়ই ২৩ বছর বয়সী ছিলেন । বিক্ষোভের কারণে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। রাহনাভার্ডকে কারাগারের পরিবর্তে জনসমক্ষে একটি ক্রেন থেকে ঝুলিয়ে এই রায় কার্যকর করা হয়।

তবে অধিকার কর্মীরা সতর্ক করে দিয়েছে, কঠোর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ ছাড়াই অনিবার্যভাবে আরও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে। বিক্ষোভের কারণে আরও এক ডজন লোককে ইতিমধ্যে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং একই সংখ্যককে বিভিন্ন অপরাধের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে যাতে তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হতে পারে।

নরওয়ে-ভিত্তিক ইরান হিউম্যান রাইটস গ্রুপের পরিচালক মাহমুদ আমিরি-মোঘাদাম বলেছেন, "মৃত্যুদণ্ডের রাজনৈতিক মুল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি না করা হলে, আমরা গণমৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হব।"

তিনি ইরানের নেতাদের "জনগণের মধ্যে ভয় ছড়িয়ে দিতে এবং সরকারকে রক্ষা করার জন্য মৃত্যুদন্ড কার্যকর করার" অভিযোগ করেছেন।

সেপ্টেম্বরে মাহসা আমিনির মৃত্যুর ফলে মূলত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। নারীদের জন্য ইরানের কঠোর পোষাক বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ইসলামী প্রজাতন্ত্রের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে এই বিক্ষোভটি।

কর্তৃপক্ষ মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হওয়া ব্যক্তিদের "দাঙ্গাবাজ" হিসাবে বর্ণনা করেছে, যাদের দেশের শরিয়া আইন অনুসারে বিচার করা হচ্ছে।

কিন্তু একটিভিস্টরা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অস্পষ্টভাবে শরিয়া আইনি অভিযোগের ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। যেমন "ঈশ্বরের বিরুদ্ধে শত্রুতা,"পৃথিবীতে দুর্নীতি" এবং "সশস্ত্র বিদ্রোহ", যা সবই ইরানে মৃত্যুদণ্ড পাবার মত অপরাধ।

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বর্তমানে বিক্ষোভের কারণে মৃত্যুদণ্ডের ১১টি মামলা এবং আরও ৯টি মামলার কথা নিশ্চিত করেছে, যেখানে ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এমন অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে যেখানে তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হতে পারে।