অনেক জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মেসির আর্জেন্টিনা ৩-০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করলো লুকা মদ্রিচের শক্তিশালী ক্রোয়েশিয়াকে।
বিশ্বময় কোটি কোটি দর্শক দেখার অপেক্ষায় ছিলেন এই দুই তারকা কিভাবে তাদের নিজ নিজ দলকে নেতৃত্ব দেন, সেইদিকে। আর সেটাই স্পষ্ট হয়ে গেল এই হাই ভোল্টেজ ম্যাচে।
শুরু থেকেই দুই দল দারুণ আক্রমণাত্মক খেলছিল। আর্জেন্টিনার স্ট্রাইকার আলভারেজ আচমকা এক সুযোগে ক্রোয়েশিয়ার পেনাল্টি বক্সের ভেতরে বল নিয়ে ঢুকে পড়েন এবং গোলকিপারকে কাটাতে গেলে তার সাথে সংঘর্ষে মাটিতে পড়ে যান। আর্জেন্টিনা পেয়ে যায় প্রথম পেনাল্টি।
অধিনায়ক মেসির নিখুঁত এবং তীব্র পেনাল্টি শটে ক্রোয়েশিয়ার গোলরক্ষকের কিছু করার ছিল না। ফলে আর্জেন্টিনা ১-০ গোলে এগিয়ে যায়।
তার কয়েক মিনিট পরই একটি লং পাস রিসিভ করে আলভারেজ প্রায় ৫০ মিটার দৌড়ে ক্রোয়েশিয়ার বিরুদ্ধে দলের দ্বিতীয় গোলটি করেন।
আর্জেন্টিনা দুটো গোল করে ক্ষান্ত হয়নি। আগের ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়ে তারা গোল ব্যবধান আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়।
আত্মবিশ্বাসী ক্রোয়েশিয়া ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর জোর চেষ্টা করছিল। ৬৯ মিনিটের মাথায় মেসি তার যাদুকরি বল কন্ট্রোল আর ড্রিবলিং ক্ষমতা প্রয়োগ করে ডানের সাইড লাইন দিয়ে বল নিয়ে অনেকখানি দৌড়ে প্রতিপক্ষের ডিফেন্স ভেঙ্গে একদম গোলপোস্টের কাছে পৌঁছে যান।
এবারে আলভারেজকে ঝটিকা পাস দিয়ে সহজ গোলের সুযোগ তৈরি করে দেন অপ্রতিরোধ্য মেসি। মুহূর্তের মধ্যে দলের পক্ষে তৃতীয় গোলটি করেন আলভারেজ।
ক্রোয়েশিয়া পুরো খেলায় আর্জেন্টিনার শক্ত ডিফেন্স প্রায় ভাঙ্গতেই পারেনি। যদিও তারা এই বিশ্বকাপে টপ ফেভারিট ব্রাজিলসহ বিভিন্ন দলকে হারিয়ে ক্রমশ আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছিল।
মেসি তার দক্ষ নেতৃত্ব, গোল করার ক্ষমতা এবং অ্যাসিস্ট সবকিছু নিয়ে আর্জেন্টিনা দলকে এই বিশ্বকাপে যেভাবে খাদ থেকে তুলে আনলেন, তা একটি উদাহারণ হয়ে থাকবে।
তিনি কি শেষ পর্যন্ত পারবেন রবিবারের ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ শিরোপা উপহার দিতে? সেটা যদি পারেন, তাহলে ফুটবল কিংবদন্তী ডিয়েগো ম্যারাডোনার যোগ্য উত্তরসুরী হিসাবে মেসির স্থানটি ইতিহাসে স্থায়ী হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ফ্রান্স আর মরক্কোর মধ্যেকার ম্যাচে বিজয়ী দল ফাইনালে আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হবে।