বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “একটি স্বার্থান্বেষী মহল নানা গুজব ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে। তবে, জনগণের বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নেই।” সোমবার (৫ ডিসেম্বর) মিরপুর সেনানিবাসের ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-এর গ্রাজুয়েশন অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশের দুর্ভাগ্য হচ্ছে যখনই দেশ একটা শান্তিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যায়, তখন অনেকেরই (স্বার্থান্বেষী মহল) এটা পছন্দ হয়না।” যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সৃষ্ট বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের কথা উল্লেখ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। বলেন, তার সরকার এখনও বাংলাদেশকে স্থিতিশীল রাখতে সক্ষম হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তার সরকার কোভিড-১৯ মহামারীকালে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪৮০০ কোটি ডলারে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছে। যা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ৫০০ কোটি ডলার। রিজার্ভের অর্থ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন, টেস্টিং কিট, খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য সংগ্রহে ব্যয় করা হয় বলেও জানানতিনি।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, “ সবসময় সরকারের লক্ষ্য বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন। আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, মাদক ও দুর্নীতিমুক্ত রেখে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন অব্যাহত রাখব। আমরা কারও সঙ্গে যুদ্ধ চাই না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এমন একটি পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন করেছিলেন, যেখানে তিনি বলেছেন সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বিদ্বেষ নয়।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রতিটি দেশের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কারণ, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। যুদ্ধের পরিণতি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। যদি কোন সমস্যা হয়, আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করি।” এ প্রসঙ্গে তিনি প্রতিবেশিদের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমুদ্রসীমা বিরোধের সমাধান এবং আলোচনার মাধ্যমে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনের ওপর জোর দেন। বলেন, “যদি আমরা অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা অর্জন করতে না পারি, আমরা আমাদের স্বাধীনতা এবং এর চেতনাকে ধরে রাখতে পারব না। সুতরাং, আমরা লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছি।” তিনি বলেন, “নিরবচ্ছিন্ন গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সরকারের বিশেষ মনোযোগের কারণে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে।”
শেখ হাসিনা বলেন, “সশস্ত্র বাহিনী যেকোনো দুর্যোগে সর্বদা জনগণের পাশে থাকে। তারা দেশের জনগণের আস্থা অর্জন করেছে। বিদেশের ভূখন্ডে শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতার সঙ্গে তাদের ভূমিকা পালনের জন্য সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশ জাতিসংঘের কাছ থেকে প্রশংসা পাচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী, দেশের ভাবমূর্তি সমুন্নত রাখার জন্য সশস্ত্র বাহিনীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। তিনি নতুন এনডিসি ও এএফডব্লিউসি গ্র্যাজুয়েটদের তাদের নিজ নিজ কোর্স সফলভাবে সমাপ্ত করার জন্য অভিনন্দন জানান।