স্থলবেষ্টিত আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত পারাপারের পথ, বাণিজ্য ও মানুষের চলাচলের জন্য সোমবার থেকে পুনরায় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। এর এক সপ্তাহ আগে এক আফগান “সন্ত্রাসীর” হাতে পাকিস্তানের এক নিরাপত্তারক্ষীর মৃত্যুর ঘটনার জেরে ঐ সীমান্ত পথটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
মারাত্মক ঐ গোলাগুলির ঘটনাটি দুই দেশের মধ্যকার চামান সীমান্ত টার্মিনালে ১৩ নভেম্বর সংঘটিত হয়। টার্মিনালটি ফ্রেন্ডশিপ গেট হিসেবেও পরিচিত। ঘটনায় আরও দুই সৈন্যও আহত হয়েছিলেন।
চামান জেলার এক উচ্চপদস্থ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, আবদুল হামিদ জেহরি রবিবার ঘোষণা দেন যে, “অপরাধীকে দ্রুতই গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে” বলে তালিবান সরকারের কাছ থেকে “দৃঢ় আশ্বাস” পাওয়ার পর, পাকিস্তান আন্তঃসীমান্ত পারাপার পথটি পুনরায় চালু করতে সম্মত হয়েছে।
তালিবান এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে যে, হামলাকারী তাদের সীমান্তরক্ষীদের একজন ছিল। তারা জানায় যে, হামলাকারীকে খুঁজে বের করে আটক করতে দ্রুতই একটি তদন্ত আরম্ভ করা হয়েছে।
হামলার কিছুক্ষণ পরই ভিওএ-কে দেওয়া নিরাপত্তা ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় যে, বন্দুকধারী ঐ ব্যক্তি একদল তালিবান প্রহরীর মধ্যে রয়েছেন, যার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি দ্রুতগতিতে তার বন্দুকটি বের করে এক প্রবেশপথের কাছে থাকা পাকিস্তানি সৈন্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছেন। এর পরপরই অন্যান্য সহযোগীদের সাথে মিলে দৌঁড়ে তিনি আফগানিস্তানের ভেতরে চলে যান। তাদের মধ্যে একজন পরবর্তীতে আবার ফিরে আসেন এবং ভিডিওতে দেখা যায় যে তিনি নিরাপত্তা ক্যামেরার দিকে বেশ কয়েকটি গুলি করছেন, যার ফলে অবশেষে ক্যামেরাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যায়।
চামান টার্মিনাল এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় তোরখাম সীমান্ত পারাপারটি আফগানিস্তানের প্রধান বাণিজ্য ও ট্রানজিটের পথ। দেশটি এই দুই পথেই মূলত পাকিস্তানের সাথে ও তার মধ্য দিয়ে বাণিজ্য পরিচালনা করে। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ছোট পারাপারের পথ রয়েছে। এই দুই দেশের মধ্যকার সীমান্তের মোট দৈর্ঘ্য ২,৬০০ কিলোমিটার।
সীমান্ত সপ্তাহব্যাপী বন্ধ থাকায় সীমান্তের উভয় দিকে শত শত ট্রাক আটকা পড়েছে। এসব ট্রাকে আফগানিস্তানের ট্রানজিট পণ্য ও দুই দেশের মালামাল রয়েছে।