সাত সপ্তাহ ধরে চলা শাসক-বিরোধী আন্দোলনে, তীব্র দমন-পীড়নের মুখেও ইরানেে রোববার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ করে কুর্দি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নতুন করে বিক্ষোভ শুরু হয়।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে মহিলাদের জন্য কঠোর পোশাক বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে গ্রেপ্তার মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ, ১৯৭৯ সালের বিপ্লবের পর থেকে ক্ষমতায় থাকা নেতৃত্বের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১৯ সালের নভেম্বরের বিক্ষোভের বিপরীতে এই বিক্ষোভ শেষ হবার কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।বরং তা দেশব্যাপী সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী, বিশ্ববিদ্যালয়, রাস্তা এবং এমনকি স্কুলগুলিতে ছড়িয়ে পড়ছে।
নরওয়েভিত্তিক হেঙ্গাও অধিকার গোষ্ঠী জানিয়েছে, কুর্দিস্তান প্রদেশের মারিভান শহরে রোববার এক বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনী গুলি চালায় এবং এতে ৩৫ জন আহত হয়।
তেহরানে মারিভানের এক কুর্দি শিক্ষার্থী, নাসরিন গাদরীর মৃত্যুর পর সর্বশেষ বিক্ষোভ শুরু হয়। হেঙ্গাওয়ের মতে, তিনি শনিবার পুলিশের পিটুনিতে মাথায় আঘাত পেয়ে মারা যান।
ইরানি কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা ছবিতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা সরকারি প্রশাসনিক ভবন লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করছে । তারা এই ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পতাকা নামিয়ে পুড়িয়ে দেয়। হিজাববিহীন নারীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে আসেন।
হেঙ্গাও আরও যোগ করে, কর্তৃপক্ষ ওই এলাকায় অধিক আইন শৃংখলাবাহিনী নিযুক্ত করেছে। রাত বাড়ার সাথে সাথে শহর জুড়ে গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।
এদিকে, উত্তর ইরানের বাবোলের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাফেটেরিয়ায় আইন অনুযায়ী নারী পুরুষ আলাদা বসার ব্যবস্থার নিয়ম উঠিয়ে দিয়েছে।
অজস্র ভিন্ন ভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে এই বিক্ষোভ অব্যাহত রাখা হয়েছে।
আইএইচআর শনিবার বলেছে যে মাহসা আমিনি বিক্ষোভের বিরুদ্ধে দমন-পীড়নে কমপক্ষে ১৮৬ জন নিহত হয়েছে, বুধবার থেকে এই সংখ্যা ১০ জন বেড়েছে।
এতে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের সুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত সিস্তান-বালুচিস্তানে গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে এ পর্যন্ত পৃথক বিক্ষোভে আরও ১১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন, যা এই সরকারের জন্য আরও বড় ধরনের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।