দক্ষিণ আফ্রিকার পুলিশ বলছে, জোহানেসবার্গের পশ্চিমে ক্রুগারসডর্প শহরে এই সপ্তাহে একটি সচল খনির বাইরে অন্তত ২১ জন সন্দেহভাজন অবৈধ খনি শ্রমিকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার সঙ্গে জড়িত বলে কাউকেই এখনো সন্দেহভাজন বলে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে মৃতদেহগুলো অন্য কোন স্থান থেকে এনে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এই মৃত্যু দেশটিতে ব্যাপকভাবে অবৈধ খনির কার্যক্রমের ইঙ্গিত দেয়।
মৃতদেহগুলো আবিষ্কার পুরো দেশকে শোকাহত করেছে। ক্রুগারসডর্প শহরে গত জুলাই মাসে বন্দুকের মুখে আট নারীকে গণধর্ষণের ঘটনাও ঘটে। পুলিশ সেই সময়ে সন্দেহভাজনদের মধ্যে কয়েক ডজন অবৈধ খনি শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছিল।
প্রিটোরিয়ায় ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজের সিনিয়র ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর উইলেম এলস বলেছেন, "এটা লক্ষ্যহীন খুন-খারাবি নয়।" তারা একটি বৃহৎ, সুসংগঠিত এবং আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্রের অংশ। সুতরাং, খনি শিল্পে এই ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য আমাদের সুসজ্জিত এবং সু-প্রশিক্ষিত পুলিশ অফিসারদের প্রয়োজন।"
তিনি বলেন, "দক্ষিণ আফ্রিকায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর ঠিক যেরকম হওয়া দরকার, তারা মোটেও সেরকম নয়।"
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদেশীরা শুধু ভূগর্ভে খননই করছে না, বরং বিদেশে খনিজ দ্রব্য বিক্রি করার জন্য আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক-এর অংশ হিসেবেও তারা কাজ করছে।
লিম্পোপো বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞানের অধ্যাপক, উইটনেস মালুলেক বলেছেন, দক্ষিণ আফ্রিকার স্থানীয় অধিবাসীরা যুক্ত না থাকলে এই ধরনের কর্মকাণ্ড কিছুতেই সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, “দক্ষিণ আফ্রিকার যুবকরাও এর সাথে জড়িত এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সংগঠিত অপরাধী নেটওয়ার্ক এর অংশ। তাই এটা বলা ঠিক হবে না যে, শুধুমাত্র অবৈধ অভিবাসীরাই এই ধরনের অপরাধ কিংবা কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে জড়িত। এটা বলা বিভ্রান্তিকর হবে।”
দেশটিতে ৬,০০০ এরও বেশি পরিত্যক্ত খনি রয়েছে, যার মধ্যে কয়েকটি, বহুদশক ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুরনো খনিগুলো সঠিকভাবে বন্ধ করার জন্য, খনি শিল্পকে আরও বেশি দায়িত্বশীল হতে হবে।
যে খনি-খাদে মৃতদেহগুলো পাওয়া গেছে, সেই খাদটি সাম্প্রতিক সময়ে বৃষ্টির পানিতে ভরা ছিল । তবে, পুলিশ বলছে, মৃত্যুর সঠিক কারণ নির্ধারণের জন্য মরদেহের ময়নাতদন্ত করা হবে।