বুরকিনা ফাসো’র রাজধানীর প্রধান সেনাছাউনি এবং কিছু আবাসিক এলাকা থেকে শুক্রবার ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। রয়টার্সের সংবাদাতারা জানিয়েছে যে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের কাছে একটি বড় ধরণের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভবনের দিকে যাওয়ার সড়কগুলোতে সৈন্যরা
অবস্থান নিয়েছে এবং প্রশাসনিক ভবন এবং জাতীয় টেলিভিশনে প্রবেশপথ এবং তাদের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে।
সরকারি কোনো মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। এটি একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা ছিল কি-না তা এখনও স্পষ্ট নয়।
কর্নেল পল-হেনরি সান্দাওগো দামিবার নেতৃত্বে একটি সামরিক জান্তা এক এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে, গত ২৪ জানুয়ারি বুরকিনা ফাসোর ক্ষমতা দখল করে।
এই ক্ষমতা দখলকে বেসামরিক নাগরিকরা বিপুলভাবে সমর্থন জানায়। ইসলামী জঙ্গিদের দমন করতে ব্যর্থতার কারণে তারা এর আগের প্রেসিডেন্ট রোশ কাবোরের বেসামিরক সরকারের প্রতি নাখোশ ছিল। ইসলামী জঙ্গিরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হাজার হাজার বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে এবং দেশটির উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের ব্যাপক এলাকা দখল করে নেয়।
জানুয়ারি অভ্যুত্থানের পর, প্রথম বিবৃতিতে দামিবা নিরাপত্তা পুনঃপ্রতিষ্ঠার
প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দামিবাকে প্রায়শই সৈনিকের পোষাক ও বৈমানিকের সানগ্লাস পরে জনসম্মুখে আসতে দেখা যায়।
তবে পশ্চিম আফ্রিকার এই দরিদ্র দেশটিতে জঙ্গিহামলা ব্যাপকতর হয়েছে এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে । নিরাপত্তা সুত্রগুলো জানিয়েছে জানুয়ারিতে, যেসব সেনা কর্মকর্তা ও সেনা সদস্য দামিবাকে সমর্থন দিয়েছিল, কোন অগ্রগতি না দেখে তারা এখন হতাশ হয়ে পড়েছে।
এই সপ্তাহে, অজ্ঞাত আততায়ীরা ১৫০ টি গাড়ি বহরে হামলা চালিয়ে ১১ জন সৈন্যকে হত্যা করে। ঐ গাড়ি বহরটি উত্তর বুরকিনা ফাসো’র একটি শহরে রসদ নিয়ে যাচ্ছিল। ঐ ঘটনায় ৫০ জন বেসামরিক নাগরিক নিখোঁজ রয়েছে।
চলতি সপ্তাহে, বুরকিনা ফাসো’র বিভিন্ন শহরে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
২০১৮ সাল থেকে দেশটির বেশিরভাগ অঞ্চল অনিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়েছে। বন্দুকধারীদের আরও হামলার ভয়ে লাখ লাখ লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। বন্দুকধারীরা প্রায়ই মোটরবাইকে করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের ওপর হামলা চালায়।
এসব হামলায় হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।