ইরানে বিক্ষোভ ১০তম রাতে গড়িয়েছে

ইরানের কুর্দি নিয়ন্ত্রিত শহর কামিশলিতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে নারীরা বিক্ষোভ করছে।

ইরানে কুখ্যাত নৈতিকতা পুলিশের হেফাজতে কুর্দি নারী মাহসা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় শুরু হওয়া বিক্ষোভের ১০তম রাত অতিবাহিত হচ্ছে। সোমবার কর্মকর্তারা জানিয়েছে, এর ফলে প্রাণঘাতী ক্র্যাকডাউনে ১২০০-র বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

হিজাব এবং শালীন পোশাক সংক্রান্ত ইরানের কঠোর নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগে মাহসা আমিনিকে গ্রেপ্তারের পর ২২ বছর বয়সী এই তরুণীর মৃত্যুর কারণে পুরো দেশ বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে। বিক্ষোভের বিরুদ্ধে ইরান ব্যাপকভাবে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করায় কমপক্ষে ৪১ জন নিহত হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইরানে “ব্যাপক এবং অসম পরিমাণ শক্তি প্রয়োগের” প্রতিবাদ করার একদিন পরে জার্মানি ইরানের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে। এদিকে তেহরান ব্রিটিশ ও নরওয়েজিয়ান দূতদের ডেকে পাঠায়। এর ফলে ইরান ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পায়।

অসলো-ভিত্তিক দল ইরান হিউম্যান রাইটসের শেয়ার করা ফুটেজে দেখা যায়, তেহরানের জনতা ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির (৮৩) ৩ দশকেরও বেশি শাসনের অবসানের আহ্বান জানিয়ে “স্বৈরশাসকের মৃত্যু” বলে স্লোগান দিচ্ছে। রাতারাতি ইরান জুড়ে আবারও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

জনতা স্লোগান দিচ্ছিল “নারী,জীবন,স্বাধীনতা!” নারী বিক্ষোভকারীরা তাদের হিজাব অগ্নিকুণ্ডে এবং জ্বলন্ত আবর্জনার ডাম্পস্টারে ছুঁড়ে ফেলে পুড়িয়ে দেয়। ইরানের সমাবেশের এই আর্তনাদ সপ্তাহান্তে লন্ডন এবং প্যারিসসহ বিশ্বব্যাপী হওয়া সংহতি বিক্ষোভে প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

অধিকার গোষ্ঠী আইএইচআর জানিয়েছে, রবিবার অন্তত ৫৭ জন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে।

উত্তর মাজানদারান প্রদেশে প্রায় ৪৫০ জন এবং শনিবারে প্রতিবেশী গিলানে ৭শ জনেরও বেশি ও অন্যান্য বেশ কয়েকটি অঞ্চলে কয়েক ডজনেরও বেশি গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া গেছে। সব মিলিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১২শ-রও বেশি বলে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে জানা গেছে।