বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গায়, ধরলা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ধরলা পাড়ের শতশত পরিবার। বিলীন হওয়ার হুকিতে নদীতীরের গ্রামগুলো।
গত আড়াই মাসে ধরলার ভাঙনে নদীতীরের জনবসতির ফসলি জমি, বাঁশঝাড়, বাগান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। চর গোরকমন্ডল গ্রামে যাতায়তের একমাত্র সড়কের প্রায় ৩০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায়, হুমকির মুখে পড়েছে গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার। দ্রুত ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না নিলে পুরো গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে ন্থানীয় বাসিন্দারা।
চর গোরকমন্ডল এলাকার বাসিন্দা আমীর আলী (৪২) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩৭), “জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে এই এলাকায় ধরলা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই মাসে কয়েকশ’ বিঘা আবাদী জমি, গাছপালার বাগান ও বাঁশঝাড় নদীতে বিলীন হয়েছে। আর গত এক সপ্তাহে আমাদের চলাচলের একমাত্র সড়কটিও নদীগর্ভে গেছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে ভিটা-বাড়িও নদীতে চলে যাবে।”
এলাকার ইউপি সদস্য আয়াজ উদ্দিন বলেন, “আমার এই গ্রামে সাড়ে তিনশ পরিবার বসবাস করে। তাছাড়া এখানে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি মাদরাসা, চারটি মসজিদ, একটি সরকারি আবাসন প্রকল্পসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
তিনি বলেন, “ লোকজন এলাকা ছাড়ছে। ইতোমধ্যে ১০টি পরিবার ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। আরও কয়েকটি পরিবার অন্য জায়গায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে নদীর তীরবর্তী চর গোরকমন্ডলসহ অনেক এলাকা হয়তো অল্প কিছুদিনের মধ্যে মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে।”
নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, “ নাওডাঙ্গা এলাকার নদী ভাঙন উদ্বেগজনক। ভাঙন প্রতিরোধে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে আবেদন করে, সংসদ সদস্যের সুপারিশসহ কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। এর পর, পানি উন্নয়ন বোর্ড মাত্র দুইশ’ জিও ব্যাগ দিয়েছে। যা দিয়ে ভাঙন রোধ করা সম্ভব হয়নি।”
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, “ধরলা ও তিস্তাসহ যে সকল এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে , আমরা সেইসব এলাকা পরিদর্শনসহ নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা করছি। জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন প্রতিরোধের কাজ চলছে।”