রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান দ্রুত টেকসই প্রত্যাবাসন:পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন ও জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত মিজ নয়েলিন হেইজার

রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় স্বদেশে টেকসই প্রত্যাবাসনই, এই সমস্যার একমাত্র সমাধান বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন।

বুধবার (২৪ আগস্ট) জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত মিজ নয়েলিন হেইজার, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে তার দপ্তরে সৌজন্য সাক্ষাত করেন। এসময় ড. আব্দুল মোমেন এ মন্তব্য করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “মানবিক বিবেচনায় আশ্রিত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘ অবস্থানের কারণে, বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক, পরিবেশসহ নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে । রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় স্বদেশে টেকসই প্রত্যাবাসনই এ সমস্যার একমাত্র সমাধান।”

ড. আব্দুল মোমেন বলেন, “প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অচলাবস্থার ফলে, রোহিঙ্গাদের মাঝে বিরাজমান হতাশা তাদেরকে আইনবিরোধী কর্মকাণ্ডসহ উগ্রবাদে সম্পৃক্ত করতে পারে। যা আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হয়ে উঠবে।”

জাতিসংঘের বিশেষ দূত মিজ নয়েলিন হেইজার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি চলমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সমস্যা সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলের মনোযোগ ধরে রাখতে এবং রাখাইনে তাদের প্রত্যাবাসন সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে; জাতিসংঘ, আসিয়ান এবং মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশসমূহে প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার বিষয়ে কাজ করবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তবে, এক্ষেত্রে মিয়ানমার সরকারের ভূমিকাই মুখ্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চলমান দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক প্রচেষ্টার বিষয়ে বিশেষ দূতকে অবহিত করেন। মিয়ানমারে সৃষ্ট এই সমস্যার সমাধান একমাত্র মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার মাধ্যমে সমাধানযোগ্য বলে তিনি মন্তব্য করেন।

মানবিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের দক্ষতাবৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে যে সকল শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, তা তাদের প্রত্যাবাসনের পরে রাখাইন সমাজে টেকসই সহাবস্থানে সহায়ক হবে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত মিজ নয়েলিন হেইজার, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য দেশটির সরকারের নেতৃত্বে পরিচালিত মানবিক কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেন। উত্তর রাখাইনে আসিয়ান ও জাতিসংঘের অর্থবহ উপস্থিতি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিশেষ সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন জাতিসংঘের বিশেষ দূত ।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের বিষয়টি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গুরুত্বের সাথে উপস্থাপনের জন্য বিশেষদূতকে অনুরোধ করেন। এ অঞ্চলে তাঁর কাজের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার আলোকে দ্রুততম সময়ে রোহিঙ্গাদের টেকসই প্রত্যাবাসন শুরু করতে, বিশেষ দূত নয়েলিন হেইজার বিশেষ ভূমিকা পালন করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ড. মোমেন।

গত মঙ্গলবার কক্সবাজারে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন নয়েলিন হেইজার। গত সোমবার চার দিনের সফরে ঢাকায় পৌঁছান জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত।