তেলের উচ্চমূল্যে আকাশ ছুঁয়েছে সৌদি আরামকোর মুনাফা

সৌদি আরবের জেদ্দায়, আরামকোর একটি সরবরাহ স্থাপনা ‘নর্থ জেদ্দা বাল্ক প্ল্যান্ট’। এই সরবরাহ কেন্দ্রে তেল মজুদের ট্যাংকগুলোর সামনে তেলবাহী ট্রাকগুলো সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে, ২১ মার্চ ২০২১। (ফাইল ফটো)

বিশ্লেষকদের পূর্বাভাসকে ছাড়িয়ে বছরের দ্বিতীয় কোয়ার্টারে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় জ্বালানী কোম্পানী সৌদি আরামকো’র মুনাফা ৯০শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে রবিবার কোম্পানীটি জানিয়েছে। জ্বালানির উচ্চমূল্য, বিপুল পরিমাণ বিক্রি এবং পরিশোধনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এমন উচ্চ মুনাফা অর্জন সম্ভব হয়েছে।

আয়-প্রতিবেদনে আরামকো’র প্রধান নির্বাহী আমিন নাসের বলেন, কোম্পানীটি প্রত্যাশা করছে যে, “এই দশকের বাকি সময়টা জুড়েই তেলের চাহিদা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে, যদিও স্বল্পমেয়াদী বৈশ্বিক পূর্বাভাসে নিম্নমুখী অর্থনৈতিক চাপের কথা বলা হচ্ছে।”

৩০ জুনে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিক পর্যায়ে আরামকো’র প্রকৃত মুনাফা বেড়ে ৪,৮৩৯ কোটি ডলার হয়। এক বছর আগে মুনাফার পরিমাণ ছিল ২,৫৪৩ কোটি ডলার।

১৫ জন বিশ্লেষকের প্রাক্কলনের গড় হিসেব অনুযায়ী, বিশ্লেষকরা ৪,৬২০ কোটি ডলার প্রকৃত মুনাফা আশা করেছিলেন।

কোম্পানীটি নিজেদের লক্ষ্যমাত্রার সাথে মিল রেখে, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক পর্যায়ের জন্য ১,৮৮৯ কোটি ডলার লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। তৃতীয় ত্রৈমাসিক পর্যায়ে এই লভ্যাংশ প্রদান করা হবে।

আরামকোর শেয়ারের মূল্য এই বছর ২৫ শতাশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক বছরের মধ্যে, এ বছর তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। বড় জ্বালানি রফতানিকারক দেশ রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ফলে, আগে থেকেই সরবরাহ সংকটে থাকা বৈশ্বিক বাজারে, এ বছর সরবরাহ আরও হ্রাস পায়।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অন্যান্য বৃহৎ তেল উৎপাদকরাও নিজেদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যাতে সকলেই মুনাফা বৃদ্ধির তথ্য জানিয়েছে।

২৯ জুলাইতে এক্সন মোবিল কর্পোরেশন তাদের সর্বকালের সর্বোচ্চ ত্রৈমাসিক পর্যায়ের মুনাফার খবর জানায়। কোম্পানীটির ঐ সময়ে প্রকৃত মুনাফার পরিমাণ ছিল ১,৭৯০ কোটি ডলার। মুনাফার এই পরিমাণ, আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় চারগুণ বেশি।

গ্যাসোলিন ও ডিজেলের মত জ্বালানি উৎপাদনের ক্ষেত্রে মুনাফার হার বিশ্বব্যাপী ব্যাপক পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে জ্বালানি উৎপাদনকারীদের মুনাফা আকাশ ছুঁয়েছে। এসব উৎপাদনকারীর মধ্যে রয়েছে ইউরোপের শেল এবং টোটালএনার্জিস। উভয় কোম্পানীই ২৭ জুলাই তাদের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

আরামকো জানিয়েছে যে, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক পর্যায়ে, গড়ে প্রতিদিন তাদের মোট হাইড্রোকার্বন উৎপাদন ছিল ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ব্যারেল তেলের সমান।