বিকিনি পরে ছবি পোস্ট, ছাত্রের বাবার অভিযোগে সেন্ট জেভিয়ার্স থেকে চাকরি গেলো অধ্যাপকের

সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়

পেশায় তিনি অধ্যাপক। বিকিনি পরে ছবি আপলোড করেছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। এমনটা অন্যায় বলে দাবি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন এক ছাত্রের বাবা। সেই অভিযোগের জেরে কাজ থেকে ইস্তফা দিতে হল অধ্যাপককে। কলকাতার এক নামী অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

জানা গেছে, সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক অধ্যাপক ইনস্টাগ্রামে বিকিনি পরা একটি ছবি দিয়েছিলেন। অভিযোগ, সেই ছবি দেখছিলেন স্নাতক স্তরের প্রথম বর্ষের এক ছাত্র। ওই ছবি দেখার সময়ে তাকে দেখে ফেলেন ছাত্রের বাবা বিকে মুখার্জী। এর পরেই বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়ে অভিযোগ জানান ওই বাবা। তিনি জানান, "এক অধ্যাপিকা অন্তর্বাস পরে সোশ্যাল মিডিয়াতে ছবি দিয়েছেন। সেই ছবি দেখছিল আমার ছেলে।অভিভাবক হিসাবে একজন অধ্যাপকের এমন ছবি দেখা আমার পক্ষে ভীষণ লজ্জাজনক।"

অভিযুক্ত অধ্যাপক জানিয়েছেন, ২০২১ সালের আগস্ট মাসে তিনি সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন। যে ছবিগুলি দেখিয়ে তার ‘অন্যায়’ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা হয়েছে, সে ছবিগুলি তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেওয়ার বেশ কয়েক মাস আগে পোস্ট করেছিলেন, ইনস্টাগ্রামের স্টোরি হিসেবে। তার অ্যাকাউন্টটি প্রাইভেট, সকলে সব দেখতে পান না। তাছাড়া ইনস্টাস্টোরি এমনিতেও ২৪ ঘণ্টা পরে ডিলিট হয়ে যায়।

৮ অক্টোবর ২০২১, তাকে ডেকে জানানো হয়েছে ছবির ব্যাপারে এবং রীতিমতো আপত্তির সুরে বলা হয়েছে, কেন তিনি ওই পোশাক পরে ছবি আপলোড করেছেন মিডিয়ায়, কেনই বা সে ছবি পাঠিয়েছেন ছাত্রকে।

অধ্যাপিকার আইনজীবী, ঝুমা সেন জানিয়েছেন, এবছর মার্চ মাসে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে সেন্ট জেভিয়ার্সে। যাদবপুর পূর্ব থানায় এফআইআরও করা হয়েছে। ওই নোটিসে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কীসের ভিত্তিতে সেন্ট জেভিয়ার্স কর্তৃপক্ষ মনে করছে যে ওই পোশাক পরা অন্যায়। একজন ছাত্রের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে কার্যত কাজ থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। অধ্যাপকের কোনও বক্তব্য শুনতেই চায়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এপ্রিল মাসে অপ্রাসঙ্গিক একটা উত্তর দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। এমনকি জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য আহত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় এর জন্য অনেক লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারে বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, ওই ঘটনার পরে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন অধ্যাপক।

এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় বয়ে গেছে। তারা দু’পক্ষে বিভক্ত। একদলের মত, অধ্যাপকের একটি ইমেজ রয়েছে। তার এরকম কোনও ছবি আপলোড করা উচিত হয়নি। অন্যপক্ষের দাবি, পেশাগত জীবনের বাইরে অধ্যাপকের ব্যক্তিগত জীবন থাকতেই পারে। সেখানে তিনি কী পোশাক পরছেন, তাই নিয়ে নজরদারি উচিত নয়।