বিপিসির সংখ্যার মধ্যে গড়মিল আছেঃ ম. তামিম

ড. ম. তামিম।

ড. ম. তামিম। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের পেট্রোলিয়াম ও খনিজসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি রেকর্ড হারে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর মন্ত্রী-উপমন্ত্রীরা নানা যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) পাশে দাঁড়াচ্ছেন। ‘লোকসানের’ পরিমাণ উল্লেখ করে সরকার ও বিপিসি দাবি করছে, ভর্তুকি দিতে-দিতে তাদের হাজার-হাজার কোটি টাকার ‘ক্ষতি’ হয়েছে। অন্যদিকে বিরোধীরা এই খাতের ‘দুর্নীতি’ এবং ‘অনিয়মের’ প্রসঙ্গ সামনে আনছেন। এমনই বাগযুদ্ধের ডামাডোলে জ্বালানিখাতের নানা দিক নিয়ে ভয়েস অফ আমেরিকার সঙ্গে কথা বলেছেন ম. তামিম। অমৃত মলঙ্গীর সঙ্গে আলাপকালে বিপিসির হিসাব-নিকাশ নিয়ে তুলেছেন প্রশ্ন।

ভয়েস অফ আমেরিকা: সরকার বলছে যুক্তি ছাড়া দাম বাড়ানো হয়নি। এক্ষেত্রে তিনটি কারণের কথা জোর দিয়ে বলা হচ্ছে-আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যের ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে সমন্বয়, বিপিসির লোকসান কমানো এবং পাচার হওয়ার শঙ্কা। একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে যুক্তিগুলো আপনার কাছে কতটুকু গ্রহণযোগ্য?

ম. তামিম: এখন যে দাম নির্ধারণ করা হয়েছে,এর মাধ্যমে ভর্তুকি সম্পূর্ণ উঠিয়ে দেয়া হলো। সরকার এটা ঠিক মনে করলে এই পদক্ষেপ নিতেই পারে। কিন্তু বিশ্ববাজারে দাম কমলে আমাদের এখানে আবার কমানো হচ্ছে না। অতীতে আমরা দেখেছি, দাম কমার পরেও দীর্ঘদিন ধরে বিপিসি সরকারকে যে রাজস্ব আয় দেয়, তার বাইরেও প্রচুর টাকা মুনাফা করে। বিপিসি তো কোনো মুনাফাকারী প্রতিষ্ঠান না। সে যদি মুনাফা করেও থাকে, তাহলে মুনাফার টাকা আবার জনগণকেই ফিরিয়ে দিতে হবে। ভর্তুকি দিতে সমস্যা হলে তখন ওই মুনাফা থেকে দিতে হবে।

এখন বিশ্ববাজারে দাম বেড়েছে। সামনে কমে যাওয়ার পর আবার যদি বাড়ে, তাহলে দেখা যাবে শুধু জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। দাম কমলে জনগণ কোনো সুফল পাচ্ছে না। মূল্য যদি কমানোও হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ এর সুফল খুব একটা পাবে না। কারণ এখন বাসভাড়া, ট্রাকভাড়া বেড়ে গেল। অতীতের মতো কোনোটাই আর সেভাবে কমবে না। বাংলাদেশে যেটা একবার বেড়ে যায়, সেটা সেই অবস্থায়ই থাকে। কারণ বাজারের ওপরে প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।

ভয়েস অফ আমেরিকা: আপনি বিপিসির মুনাফার কথা বললেন। সরকার বলছে, এই মুনাফা অন্য উন্নয়নকাজে ব্যবহার করা হয়েছে।

ম. তামিম: এটা একেবারেই যুক্তিযুক্ত না। বিপিসি উচ্চমূল্যে তেল বিক্রির পর মুনাফা করছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান তো ব্যবসা করতে পারে না। এটা ব্যবসায়ীক মনোভাব। সরকার তো তার রাজস্ব নিচ্ছে। অন্য জায়গায় ব্যবহার করার জন্য সরকার ভ্যাট-ট্যাক্স আদায় করছে। এই মুনাফা সেই রাজস্বের অতিরিক্ত।

ভয়েস অফ আমেরিকা: সরকার বলছে প্রতিবেশী দেশসহ পশ্চিমা বিশ্বে তেলের দাম বেশি; সরকারের এই যুক্তির বিপরীতে বলা হচ্ছে তাদের মতো আয় বাংলাদেশিদের না। আমাদের আয় অনুযায়ী জ্বালানি তেলের বর্তমান দাম কতটা যৌক্তিক?

ম. তামিম: এটা সম্পূর্ণ ভর্তুকির নীতিমালার ওপর নির্ভর করে। গত ৫০-৬০ বছর ধরে আমরা দেখে আসছি, জ্বালানিতে সবসময় ভর্তুকি দেওয়া হয়। আমাদের মতো গরীব দেশে তো বটেই; প্রায় সব দেশেই ভর্তুকি দেওয়া হয়। উন্নত দেশে বাজারদরের সঙ্গে তাদের দর সম্পৃক্ত। এখন এর সঙ্গে আমাদের তুলনা করলে চলবে না। আমাদের এখানে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে অন্য সবকিছুর দাম হু-হু করে বাড়ে। এটা বুঝতে হবে। উন্নত দেশে এই প্রবণতা খুব কম। তাদের কাঠামোটাই অমন। আমাদের অর্থনীতি ওঠা-নামা দরের সঙ্গে অভ্যস্ত না। এখানে অর্থনীতি একটা স্থির অবস্থায় থাকে। এর ভেতরই আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়।

দাম কমালে অর্থনীতিতে কোনো ভূমিকা আমাদের এখানে দেখা যায় না। মুনাফার পুরো টাকাটাই ব্যবসায়ীদের পকেটে চলে যায়। এটা হলে সরকার ভবিষ্যতে প্রচুর পরিমাণে লাভ করবে। তাই বিশ্বের অন্য দেশের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না।

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম নেমে গেলে অনেক নেমে যায়। এবার যুক্তরাষ্ট্রে স্মরণকালের সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল। সেটা নিয়ে জনগণের মধ্যে অনেক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। কিন্তু সেখানে মাত্র দুই মাসের মাথায় দাম সন্তোষজনক পর্যায়ে নেমে যায়। সেখানকার জনগণ কিছুদিন বেশি দামে কিনেছে, এখন আবার কম দামে পাচ্ছে। এই অবস্থায় আসতে হলে আমাদের অর্থনীতিকে ভ্যারিয়েবল কন্ডিশনে আনতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে তেলের দাম কমার সঙ্গে সঙ্গে অন্য সবকিছুর দাম কমেছে। এটা সম্ভব হয়েছে তাদের নিয়ন্ত্রণের কারণে। আমাদের তো সেই নিয়ন্ত্রণ নেই। সুতরাং ওঠানামা দামের সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি চলবে না।

ভয়েস অফ আমেরিকা: তেলের দাম বাড়ানো নিয়ে আইএমএফের শর্তের প্রসঙ্গ আসছে। ঋণ দিতে আইএমএফ তেলের দাম বাড়ানো কিংবা ভর্তুকি কমানোর শর্ত কেন দেয়? বাংলাদেশ কি সেই শর্তই মানছে, নাকি নিজেদের অবস্থার কথা বিবেচনা করেছে?

ম. তামিম: আইএমএফের শর্ত সব সময় ভর্তুকির বিরুদ্ধে। শুধু তেলের ক্ষেত্রে না, সবকিছুতেই তারা ভর্তুকির বিরুদ্ধে। অর্থনীতির এখানে দুটো দিক আছে। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যারা ঋণ দেয়, তাদের কথা হচ্ছে ভর্তুকি দিয়ে তুমি তোমার অর্থনীতিকে ধ্বংস করছো। ভর্তুকি দিয়ে দীর্ঘদিন চালানো যাবে না।

আবার যেখানে স্টেট কন্ট্রোল আছে, তারা জনগণের সুবিধার কথা চিন্তা করে, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দুটো জিনিস চিন্তা করে, সব অনুন্নত কিংবা উন্নয়নশীল দেশ ভর্তুকি দিয়ে থাকে। উন্নত দেশেও ভর্তুকি আছে, তবে সেটা লুকানো থাকে। আমেরিকায় কৃষিখাতে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়। বিশ্ববাজারে টিকে থাকার জন্য এই ভর্তুকি দেয়া হয়। না হলে তারা টিকে থাকতে পারবে না। সুতারং ভর্তুকি নিয়ে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক এবং আইএমএফের একটা দ্বিচারিতা আছে।

২০১৩ সালে আইএমএফ বাংলাদেশকে যখন এক বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছিল, তখনো কিন্তু তেলের দাম ৫ থেকে ১০ টাকা বাড়ানো হয়েছিল। সেটা একটা শর্ত ছিল। এবার আইএমএফের থেকে আমরা কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব পাইনি। কিন্তু গণমাধ্যমে দেখেছি, তারা প্রায় ৮-১০টি শর্ত দিয়েছে। তার মধ্যে ব্যাংক ঋণের যে মাত্রা আছে সেটি ছেড়ে দিতেও বলেছে। অর্থাৎ ব্যাংকগুলো যেন বেশি সুদ আদায় করতে পারে। তারা মনিটারি কন্ট্রোলের কথাও বলেছে। এখন সরকার বলছে, কোনো শর্ত দেয়নি, এই দাম বাড়ানোর সঙ্গে আইএমএফের কোনো সম্পর্ক নেই। যেহেতু এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ঘোষণা আসেনি, তাই তাদের শর্তের কথাটা বলা ঠিক না।

ভয়েস অফ আমেরিকা: আপনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিষয়ক বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব পালন করেছেন। তখনো একবার বিশ্ব অর্থনীতিতে ধস নেমেছিল। সেই অভিজ্ঞতা থেকে জানতে চাই বিশ্ববাজারে এখন যে দাম, সেই অনুযায়ী বাংলাদেশে ডিজেল, অকটেনের দাম কত হওয়া উচিত?

ম. তামিম: সেই ২০০৮ সালে আমেরিকায় হাউজিং মার্কেটের পতনের কারণে সারা বিশ্বে একটা অর্থনৈতিক ধস নেমেছিল। কিন্তু সেটার প্রভাব আমাদের দেশে ওইভাবে আসেনি। সেই প্রভাব ছিল বিশ্বের জ্বালানি এবং খাদ্যমূল্যের ওপর। সেবছর এমনিতে আমাদের খাদ্য উৎপাদন কম হয়েছিল। তাই প্রচুর খাদ্য আমদানি করতে হয়েছিল। আর জ্বালানির দাম তো বেড়েই গিয়েছিল।

আমার এখনো মনে আছে সেই বছর আমরা ৯ হাজার কোটি টাকার মতো ভর্তুকি দিয়েছিলাম। সেই সময়ের সঙ্গে এখনকার সময়ের অনেক তফাত। সেই সময় মূলত সরকার জ্বালানিখাতে ভর্তুকি দিয়েছিল। বিপিসিকে প্রতিবছর পাঁচ হাজার কোটি থেকে সাত হাজার কোটি টাকার মতো ভর্তুকি দেওয়া হতো। ২০০৮, ২০০৯ এবং ২০১০ এর পর ধীরে ধীরে বিদ্যুতে ভর্তুকি আসে। এখন তো গ্যাসেও ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। কৃষিতে আমরা সারে ভর্তুকি দিচ্ছি। তাই ওই সময়ের সঙ্গে এখনকার তুলনা করা কঠিন।

ভয়েস অফ আমেরিকা: জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর পর অনিয়ম এবং দুর্নীতির প্রসঙ্গ সামনে আসছে। ঠিক কোন বিষয়গুলো থামানো গেলে জ্বালানিখাতে স্বস্তি ফেরানো সম্ভব?

ম. তামিম: বিপিসি যখনই কোনো মূল্যের কথা বলে, সেই মূল্যের খরচের হার তারা দেয় না। ১২০ টাকা খরচ পড়ছে, কত টাকা আনার খরচ, কত টাকা ট্যাক্স হচ্ছে, কতটাকা ভ্যাট হচ্ছে-এগুলো কিন্তু সঠিকভাবে আমরা জানতে পারি না। তারপর হঠাৎ করে হরেদরে বলে দিল ৭৭ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে কিংবা ৮০ কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে। যখন তেলের দাম সর্বোচ্চ ছিল, তখন তারা আট হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়েছে। তাদের কথা অনুযায়ী, ৭৭ কিংবা ৮০ কোটি টাকা দৈনিক যদি লোকসান গিয়ে থাকে, তাহলে ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তাদের লোকসান হওয়ার কথা। তাহলে তো আট হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হলো না। তারমানে বিপিসির সংখ্যার মধ্যে গড়মিল আছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: জুলাইয়ের শেষ দিকে বলা হয়েছিল ৩২ দিনের ডিজেল মজুদ আছে। যদি তাই হয় এখন সেই মজুদ তেল বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। বিষয়টি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?

ম. তামিম: মজুদের তেল বিক্রির পর অতিরিক্ত টাকা সরকারের কোষাগারে যাবে। পাম্প পর্যায়ে যে মজুদ ছিল, সেখানে তারা রাত ১২টার পর অতিরিক্ত মূল্যে বিক্রি করেছে। ওই একদিনেই তারা বড় ধরনের লাভ করেছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: গত মাসেও সরকার দাবি করেছিল তেলের পর্যাপ্ত মজুদ আছে। কোনো সমস্যা হবে না। অর্থনীতিতেও কোনো প্রভাব পড়বে না। এ বিষয়ে কী বলবেন?

ম. তামিম: একটা সমস্যার ভেতর দিয়ে আমরা যাচ্ছি। এটা সবাই বুঝতে পারছে। আমাদের মূল সমস্যা কিন্তু ডলারে। ডলারের সংকট আছে। গত মাসে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। কারণ রেমিটেন্স বেড়েছে। আমদানি ব্যয় কমেছে। আগস্ট যেতে-যেতে আমদানি ব্যয় আরও কমবে। রেমিটেন্স এভাবে বাড়তে থাকলে, সংকটও ধীরে ধীরে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

ভয়েস অফ আমেরিকা: জ্বালানি তেলের সঙ্গে ডলার সংশ্লিষ্ট সমস্যা ঠিক কীভাবে একীভূত হলো?

ম. তামিম: বিপিসি ডলার কিনতে পারছে না। তেল আগে যেটা তারা ৮৫-৮৬ টাকায় কিনেছে এখন সরকারি রেট অনুযায়ী ৯৫-৯৬ টাকায়ও কিনতে পারছে না। তারা যখন ব্যাংকের কাছে যাচ্ছে, ডলার চাইছে তখন বলছে ১১০ টাকা দিতে হবে। ব্যাংকগুলো আবার বলছে, তাদের কাছে ডলার নেই। বিপিসি বাংলাদেশি টাকা সরবরাহ করে ব্যাংকগুলোকে। ডলারে তারা পেমেন্ট করে না। ব্যাংকগুলোই এক্সচেঞ্জ রেটের ভিত্তিতে ডলার দেয়। সেখানে বিপিসির বড় একটা খরচ বেড়েছে।

ভয়েস অফ আমেরিকা: জ্বালানি তেলের শোধনক্ষমতা বাড়ানোর বিষয়ে আপনি সোমবারও (৮ আগস্ট) গণমাধ্যমে কথা বলেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই এ বিষয়ে কথা বলছেন। কিন্তু এতদিনে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ দেখা গেল না। এর দায়টা কার?

ম.তামিম: ঠিকই বলেছেন। আমরা অনেকদিন ধরে এই প্রসঙ্গে তাগাদা দিয়ে আসছি। সরকারের দিক থেকেও নীতিগতভাবে দ্বিতীয় শোধনাগারের কথা বলা হয়েছে। এক দশক ধরে পরিকল্পনা হচ্ছে। এখন টেন্ডারের জন্য অপেক্ষা করছে। আমি জানি না, কেন হচ্ছে না, কেন হয়নি। এর পেছনে বিনিয়োগ একটা ব্যাপার আছে। প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকার মতো লাগবে। কিন্তু বাংলাদেশে বিনিয়োগ তো কোনো ইস্যু না। শোধনাগারের সক্ষমতা বাড়লে অনেক লাভ।

আমরা যে পরিমাণ ডিজেল ব্যবহার করি, তাতে পেট্রোল রপ্তানি করে ডিজেলের সাশ্রয় করা সম্ভব। রিফাইনার মার্জিনের কারণে ১০০ ডলারের ক্রুড অয়েল (অপরিশোধিত তেল) হয়েছে সর্বোচ্চ ১৭০ ডলার। কারণ বিশ্বের রিফাইনিং ক্যাপাসিটি এখন কম। যে কারণে ক্রুড অয়েলের সঙ্গে রিফাইনিং প্রোডাক্টের দামের কোনো সামঞ্জস্য ছিল না। সাধারণ ক্রুড অয়েলের যা দাম হয়, তারচেয়ে রিফাইনিং প্রোডাক্টের দাম ১০ থেকে ১৫ ডলার বেশি হয়। যখন ক্রুড অয়েলের সরবরাহ এবং রিফাইনিং ক্যাপাসিটি সমান থাকে, তখন এই দাম দেখা যায়। অনেকেই বুঝতে পারছে না, এখন বিশ্বের রিফাইনিং ক্যাপাসিটি কমে গেছে। আমাদের নিজস্ব শোধনাগার থাকলে অনেক কম খরচ পড়তো। বর্তমান পরিস্থিতি সামাল দেয়া যেত।