গণতন্ত্রপন্থী চারজন সক্রিয়কর্মীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে মিয়ানমারের সামরিক কর্তৃপক্ষ। ঐ চারজনের বিরুদ্ধে “সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড” সংঘটনে সহযোগিতার অভিযোগ ছিল। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সোমবার এমন খবর জানায়। গত কয়েক দশকে এটিই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে কার্যকর হওয়া প্রথম মৃত্যুদণ্ড।
এক রুদ্ধদ্বার বিচারে জানুয়ারিতে তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়। ঐ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা আধাসামরিক বাহিনীকে সহায়তা করেছে। গতবছর এক সামরিক অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী মিয়ানমারের শাসনক্ষমতা দখল করে নেয় এবং বিরোধীদের উপর চরম দমনপীড়ন আরম্ভ করে।
মিয়ানমারের ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট (এনইউজি) মৃত্যুদণ্ডের খবরে সেটির প্রতি নিন্দা জানিয়েছে। এনইউজি মিয়ানমারের একটি ছায়া সরকার, যাদের ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা বেআইনী ঘোষণা করেছে।
মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন হলেন গণতন্ত্র ব্যক্তিত্ব কিয়ো মিন ইয়ু, যিনি জিমি নামেই বেশি পরিচিত। অপর একজন হলেন সাবেক আইনপ্রণেতা ও হিপ-হপ শিল্পী ফিয়ো জেয়া থ্য। দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অফ মিয়ানমার সংবাদপত্র এসব তথ্য জানায়।
৫৩ বছর বয়সী কিয়ো মিন ইয়ু এবং ৪১ বছর বয়সী ফিয়ো জেয়া থ্য তাদের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে জুন মাসে হেরে যান। থ্য হলেন মিয়ানমারের ক্ষমতাচ্যুত নেতা অং সান সু চি’র একজন মিত্র। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া অপর দুই ব্যক্তি হলেন, হ্ল মিয়ো অং এবং অং থুরা ঝ্য।
ফিয়ো জেয়া থ্য-র স্ত্রী থাজিন নিয়ুন্ট অং বলেন, তাকে তার স্বামীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার খবর জানানো হয়নি। মন্তব্যের জন্য অন্যান্যদের পরিবারের সাথে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি।
ঐ চারজনকে ঔপনিবেশিক আমলের ইনসেইন কারাগারে আটক রাখা হয়েছিল। ঘটনা সম্পর্কে অবহিত এক ব্যক্তি জানান যে, তাদের পরিবারগুলো গত শুক্রবার কারাগারে গিয়েছিল। ঐ ব্যক্তি বলেন যে, শুধুমাত্র একজন আত্মীয়কে জুম অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বন্দিদের সাথে কথা বলতে দেওয়া হয়েছিল।
সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও দণ্ডবিধির অধীনে ঐ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল এবং কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী তাদের দণ্ড কার্যকর করা হয় বলে সংবাদপত্রটি জানায়। তবে আর বিস্তারিত কিছু তারা জানায়নি।
মন্তব্যের জন্য একজন সামরিক মুখপাত্রের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাতে তাৎক্ষণিকভাবে কোন সাড়া মেলেনি।