শ্রীলঙ্কার বিক্ষোভ আন্দোলন ১০০ দিনে পড়লো

শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংকট চলাকালীন কলম্বোতে শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিংহের দফতরের বাইরে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা, ১৩ জুলাই ২০২২। (ফাইল ফটো)

শ্রীলঙ্কার প্রতিবাদ আন্দোলনটি রবিবার ১০০তম দিনে গড়ায়। একজন প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর এখন তার উত্তরসূরিকে ক্ষমতাচ্যুত করার দিকে মোড় নিচ্ছে আন্দোলনটি। ওদিকে, দেশটির অর্থনৈতিক সংকটও অব্যাহত রয়েছে।

গত সপ্তাহান্তে বিক্ষোভকারীরা গোতাবায়া রাজাপাকসের বাসভবনে আক্রমণ চালানোর কিছু আগে তিনি সেখান থেকে পালিয়ে যান। এরপর বৃহস্পতিবার তিনি পদত্যাগ করেন।

তার অব্যবস্থাপনাকেই শ্রীলঙ্কার আর্থিক সংকটের কারণ হিসেবে দেখা হয়। সংকটের ফলে গত বছরের শেষদিক থেকে দেশটির ২ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ খাদ্য, জ্বালানী ও ওষুধের সংকটে জীবনযাপন করছে।

৯ এপ্রিল দুইদিনের এক প্রতিবাদ কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনের সূচনা হয়। সে সময়ে রাজাপাকসের দফতরের সামনে হাজার হাজার মানুষ অবস্থান নেন। আয়োজকদের প্রত্যাশার তুলনায় সমবেত মানুষের সংখ্যা এতটাই বেশি ছিল যে তারা কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

শ্রীলঙ্কার সংবিধান মোতাবেক রাজাপাকসের পদত্যাগের পর প্রধানমন্ত্রী রানিল বিক্রমাসিংহে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। আগামী সপ্তাহের সংসদীয় ভোটে রাজাপাকসের স্থায়ী উত্তরসূরি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার জন্য বর্তমানে বিক্রমাসিংহেই প্রধান প্রার্থী হিসেবে এগিয়ে রয়েছেন।

তবে, রাজাপাকসে পরিবারের মিত্র হওয়ার কারণে এই অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদও বিক্ষোভকারীদের ঘৃণার পাত্র। রাজাপাকসেরা চার ভাই দ্বীপদেশটির রাজনীতিতে অনেক বছর ধরে কর্তৃত্ব ধরে রেখেছেন।

সামাজিক মাধ্যমে সক্রিয়কর্মী ও বিক্ষোভ কর্মসূচির সমর্থক, প্রসাদ ওয়েলিকুমবুরা বলেন যে, বিক্রমাসিংহেরও পদত্যাগ করা উচিৎ।

তবে, রাজাপাকসের এসএলপিপি দল বুধবারের জন্য নির্ধারিত ভোটে বিক্রমাসিংহেকেই সমর্থন করছে। সংসদের ২২৫ আসনের মধ্যে দলটির হাতে ১০০-র বেশি আসন রয়েছে।

আন্দোলনের একজন মুখপাত্র এএফপি-কে বলেন: “‘আরাগাল্য’ [সংগ্রাম] সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীগুলোর সাথে আমরা এখন আলোচনা করছি যাতে কর্মসূচিটি রানিল বিক্রমাসিংহের বিরুদ্ধে মোড় নেয়।”

শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় যে কোন কিছু করতে সামরিক বাহিনী ও পুলিশকে আদেশ দিয়েছেন বিক্রমাসিংহে। প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, ভোটের আগে সংসদের আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করতে সোমবার রাজধানীতে অতিরিক্ত সেনা ও পুলিশ নিয়ে আসা হবে।