শ্রীলঙ্কা জ্বালানীর নতুন সরবরাহ খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছে বলে সরকারি এক মন্ত্রী রবিবার জানান। ২ কোটি ২০ লক্ষ জনসংখ্যার সঙ্কটাপন্ন দেশটিতে আর মাত্র ১৫,০০০ টন পেট্রল ও ডিজেল-এর মজুদ আছে, যা দিয়ে আগামী দিনগুলোতে অত্যাবশ্যক সেবা চালু রাখতে হবে।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানী মন্ত্রী কাঞ্চনা বিজেসেকেরা সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা সরবরাহকারী খুঁজে পেতে হিমশিম খাচ্ছি। তারা আমাদের ব্যাংকগুলোর লেটার অফ ক্রেডিট (এলসি) গ্রহণ করতে অনিচ্ছুক। প্রায় ৭০ কোটি ডলারের বকেয়া রয়েছে তাই সরবরাহকারীরা এখন অগ্রিম চায়।”
গত দুই মাসে শ্রীলঙ্কা তার বেশিরভাগ জ্বালানীই ৫০ কোটি ডলারের এক ভারতীয় ঋণ-এর মাধ্যমে ক্রয় করে। তবে সেটিও মধ্য-জুলাইয়ে শেষ হয়ে যায়। গত বৃহস্পতিবার পেট্রলের এক চালান এসে পৌঁছানোর কথা থাকলেও তা আসেনি। অপরদিকে, নতুন করে কোন জ্বালানী আসারও কথা নেই বলে বিজেসেকেরা জানান।
“আমাদের কাছে প্রায় ৯,০০০ মেট্রিক টন ডিজেল এবং ৬,০০০ মেট্রিক টন পেট্রল বাকি আছে। আমরা নতুন মজুদের জন্য আমাদের পক্ষে সম্ভব সবকিছুই করছি কিন্তু আমরা জানিনা সেটা কবে হবে।”
শ্রীলঙ্কা রবিবার দিনের শুরুর দিকে জ্বালানীর মূল্য ১২%-২২% বৃদ্ধি করেছে। মে মাসে একদফা জ্বালানীর দাম বাড়ানোর ফলে মূল্যস্ফীতি ৪৫.৩% পৌঁছে যায়, যা ২০১৫ সালের পর থেকে সর্বোচ্চ।
তেলের পাম্পগুলোর বাইরে ইতোমধ্যেই অপেক্ষমান মানুষের সারি কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হয়ে পড়েছে। তবে, তাদের জ্বালানী পাওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই। জ্বালানীর অবশিষ্ট মজুদ সরকার গণপরিবহন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও স্বাস্থ্যসেবা খাতে বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে মনোযোগ দিবে বলে বিজেসেকেরা জানান।
তিনি বলেন, তেলের পাম্পগুলোতে ইতোমধ্যেই সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এখন তারা অপেক্ষমান মানুষদের মধ্যে টোকেন বিলি করবে। অনেকে সেখানে কয়েকদিন ধরেও অপেক্ষা করছেন। তিনি আরও জানান যে, বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোতে জ্বালানী রেশন করে দেওয়া হবে।
এছাড়া, সরকার রবিবার প্রায় ১০ লক্ষ সরকারি কর্মীকে পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত নিজ বাসা থেকে কাজ করতে বলেছে।
এদিকে পরিস্থিতি মূল্যায়ন করতে, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ও পররাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল রবিবার তিনদিনের এক সফরে কলম্বো এসে পৌঁছায়। ৩০০ কোটি ডলারের সম্ভাব্য এক উদ্ধার তহবিলের বিষয়ে আলাপ করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি দল ইতোমধ্যেই শ্রীলঙ্কায় অবস্থান করছে।