অস্ট্রেলিয়ার হাইকোর্ট বুধবার আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সাথে জড়িত থাকার সন্দেহে দ্বৈত নাগরিকদের অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার সরকারী ক্ষমতা বাতিল করেছে।
হাইকোর্ট বর্তমানে সিরিয়ায় বন্দী দ্বৈত তুর্কি-অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক ডেলিল আলেকজান্ডারের পক্ষে রায় দিয়েছে।
তিনি ২০১৩ সালে তুরস্কের পথে অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করেন, তিনি তার পরিবারকে বলেছিলেন যে তিনি একটি বিয়ের ব্যবস্থা করতে যাচ্ছেন এবং ফিরে আসবেন। যাইহোক, তিনি আসলে সিরিয়ায় গিয়েছিলেন এবং অস্ট্রেলিয়ান গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বলেছিল যে তিনি ইসলামিক স্টেট গ্রুপে যোগদান করেন। পরে তাকে কুর্দি বাহিনীর হাতে আটক করা হয়।
২০১৯ সালে, সিরিয়ার একটি আদালত তাকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়। যদিও তারপর থেকে তাকে দামেস্ক সরকার ক্ষমা করে দিয়েছে, তবে তিনি এখনও কারাগারে রয়েছেন।
সিডনিতে তার আইনজীবী ওসমান সামিন অস্ট্রেলিয়ান ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশনকে বলেছেন যে তার নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া ভুল ছিল কারণ উগ্রবাদি গোষ্ঠীগুলির সাথে তার কোনও সম্পর্ক ছিল না।
সামিন বলন, "দুর্ভাগ্যবশত, অস্ট্রেলিয়া তার নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করার কারণে, সে তখন থেকেই সিরিয়ার হেফাজতে রয়েছে কারণ সিরিয়ার কর্তৃপক্ষ তাকে সিরিয়ায় ছেড়ে দেবে না এবং তাকে এখন দামেস্কের একটি কারাগারে স্থানান্তর করা হচ্ছে, যা দুর্ভাগ্যবশত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য কুখ্যাত"।
হাইকোর্টের রায় অস্ট্রেলিয়ার বিদেশী যোদ্ধা আইনের একটি মূল অংশকে বাতিল করেছে যা সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সন্দেহভাজন সদস্যদের দেশে ফিরে আসা রোধ করার জন্য তৈরী হয়েছে।
একটি যুগান্তকারী মামলায়, বিচারকরা বুধবার বলেছেন যে অন্য কোনো দেশে অস্ট্রেলিয়ার কোন নাগরিক সন্ত্রাসী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হলে সরকার তার অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব কেড়ে নিতে পারবে না।
আদালত বলেছে যে অস্ট্রেলিয়ায় বিচারের মুখোমুখি হবে না এমন একজন ব্যক্তির নাগরিকত্ব প্রত্যাহার করার পরিণতি এত গুরুতর যে এটি কেবল একজন বিচারকের দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত, রাজনীতিবিদদের দ্বারা নয়।
সরকারী কর্মকর্তারা বলেছেন যে তারা এই রায়ের প্রভাব মূল্যায়ন করছেন। তারা আরো বলেছেন, ক্যানবেরার কর্তৃপক্ষ এখনও তথাকথিত অস্থায়ী বর্জন আদেশ আরোপ করতে পারে, যা দ্বৈত নাগরিকদের উগ্রবাদের সাথে সন্দেহজনক সংযোগ থাকলে তাদের দুই বছরের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসা বন্ধ করে।
আলেকজান্ডারের বোন, যিনি তার পক্ষে মামলা করেছিলেন, তিনি বলেছেন যে তার ভাই এখনও বেঁচে আছে কিনা সে সম্পর্কে তিনি নিশ্চিত নন।